ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২
ভোটের ঘোষণা দোরগোড়ায়, রাজনীতিতে বাড়ছে উত্তাপ
.jpg)
নির্বাচনের আগমনী বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের তারিখ অবশেষে প্রকাশের পথে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তারিখ ঘোষণার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ বিষয়ে ইঙ্গিত দেন।
বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা আর কোনো ষড়যন্ত্রে থেমে থাকবে না। ভোট আয়োজন বাধাগ্রস্ত করতে পরাজিত শক্তি যতই গণ্ডগোল পাকাক না কেন, সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরও জানান, চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আশাবাদের সঞ্চার করেছে।
বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন এবং বৈঠকের শুরুতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর বরাতে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা এর আগে জানিয়েছিলেন, নির্বাচন এপ্রিলের প্রথমার্ধেও হতে পারে। তবে সর্বশেষ বৈঠকে তিনি যে আশাবাদী বার্তা দিয়েছেন, তাতে ধারণা করা যাচ্ছে—নির্বাচনের সময়সীমা এখন অনেকটা চূড়ান্ত পর্যায়ে।
জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে। আমরা চাই দ্রুত নির্বাচন হোক, স্থিতিশীলতা ফিরুক।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতো দলগুলোর সঙ্গেও এরই মধ্যে একাধিক দফায় বৈঠক করেছেন ড. ইউনূস। বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে যাচ্ছেন, তাতে বোঝা যায়—প্রধান প্রধান দলগুলোর সঙ্গে অন্তত ন্যূনতম সমঝোতা হয়ে গেছে। এটা বড় অগ্রগতি।
তবে সব দলের অবস্থান একেবারে অভিন্ন নয়। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন এখনো নির্বাচনের সময়সূচি ও কাঠামো নিয়ে কিছু সংশয় প্রকাশ করেছে। জামায়াত চাইছে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) ভিত্তিক নির্বাচন, যেখানে সংসদে আসন সংখ্যা ভোটের হার অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। ইসলামী আন্দোলনও বলেছে, তদারকি ও কাঠামো এখনো নির্বাচনযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব দল বাইরে থেকে চাপ দিলেও ভেতরে ভেতরে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনেকে ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকাও চূড়ান্ত করেছে।
অন্যদিকে জাতীয় গণফ্রন্টের আমিনুল হক টিপু জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট করার চেষ্টা করছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান মনে করেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশে সন্ত্রাস ও অনিশ্চয়তা রোধ সম্ভব নয়। এখন পুরো জাতি তাকিয়ে আছে নির্বাচনের দিকে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনের পাশাপাশি দেশে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নও জরুরি।
প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্যে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন এক নতুন, নির্বাচন-কেন্দ্রিক পর্বে প্রবেশ করছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা হতে যাচ্ছে। এই ঘোষণায় রাজনৈতিক জটিলতার ঘন কুয়াশা কিছুটা হলেও কেটে যেতে শুরু করেছে।
যদিও নির্বাচন নিয়ে পুরোপুরি অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। তবে প্রধান উপদেষ্টার এই ইঙ্গিত দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক নতুন কর্মচাঞ্চল্য তৈরি করেছে। অধিকাংশ দলই এখন মনে করছে, আর সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। তাদের একটাই সুর: 'ভোট চাই, গণতন্ত্র চাই।'
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড-ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল ১৯ কোম্পানি
- বহুজাতিক কোম্পানির ‘এ’ ক্যাটাগরিতে প্রত্যাবর্তন
- এক কোম্পানির দাপটেই চাঙা শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারের উত্থান কি টেকসই হবে? বিশ্লেষকরা যা বলছেন
- ডিভিডেন্ড-ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল ১২ কোম্পানি
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১৪ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ২২ জুলাই : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, এনসিপির সকল কার্যক্রম স্থগিত
- শেয়ারবাজারে চমক দেখাল দুই বহুজাতিক কোম্পানি
- সর্বোচ্চ চাহিদার শীর্ষে ৪ কোম্পানির শেয়ার
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বহুজাতিক তিন কোম্পানি
- চাহিদার তুঙ্গে ১০ কোম্পানির শেয়ার
- ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বৃত্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে নতুন নির্দেশনা
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা