ঢাকা, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

 পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চান চরমোনাই পীর

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ২৬ ২২:৩১:০৫
 পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চান চরমোনাই পীর

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না, জবাব দিহীতা মূলক সরকার কায়েম হবে বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংগ্রামী আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি আরও জানান তাহলেই একটি সুন্দর দেশ গঠন হবে। জবাব দিহীতার অভাবেই ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়।

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ক্ষমতার মেরুকরণ হ্রাস পাবে এবং সংলাপের সংস্কৃতি সৃস্টি হবে।

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) ভিত্তিক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে প্রতিটি ভোটের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা। তারা বলেন, এ ব্যবস্থায় নষ্ট ভোট কমে আসবে এবং ব্যাপক দল ও মতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা যাবে।

শনিবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টায় খুলনার ঐতিহাসিক বাবরী চত্বরে (শিববাড়ি) আয়োজিত এক গণসমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা। ভবিষ্যৎ স্বৈরতন্ত্র থেকে দেশকে রক্ষা ও পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচার নিশ্চিতকরণ" শীর্ষক এই সমাবেশে আরও দাবি জানানো হয়বন্ধ হয়ে যাওয়া কল-কারখানা পুনরায় চালু করা এবং ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার।

তিনি আরও বলেন, ১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনো দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে একই সাথে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনায়, বক্তব্যে ও মন্তব্যে শিষ্টাচারের প্রতিলক্ষ রাখতে হবে। কারণ কোন অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে কোন সুযোগ করে দেয়া যাবে না।

চরমোনাই পীর বলেন, ৫ আগস্টের পরে দেশ গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন বলে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। সেই সংস্কার হতে হবে রাষ্ট্রের কাঠামোতে, আইনে এবং রাজনৈতিক দলের চরিত্র ও সংস্কৃতিতে। রাষ্ট্রের কাঠামো ও আইনী সংস্কারের কাজ কিছুটা অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক চরিত্র ও সংস্কৃতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসে নাই।

৫ আগস্টের পরে রাজনৈতিক হানাহানিতে নিহত-আহত মানুষের সংখ্যা শুনে আঁতকে উঠতে হয়। চাঁদাবাজী কোন অর্থেই কমে নাই। সন্ত্রাসও কমে নাই। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিডফোর্ট হাসপাতালের সামনে যে বর্বরতায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে জনতা ফুঁসে উঠেছে স্বাভাবিক কারণেই । জনতার সেই প্রতিবাদকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বর্বর সেই হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করে ফেলা হয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানের পরে মানুষ এই ধরণের রাজনীতি দেখতে চায়না। এই ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতদের একটা বড় অংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিএনপি কর্তৃকতাদের বহিস্কারের মাধ্যমে এটা প্রমানিতও বটে। তাই বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলবো, কর্মীদের অপরাধের দায়ভার দল হিসেবে আপনাদের বহন করতেই হবে।

চাঁদাবাজরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা দেখিয়েই জনতার কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। তাই জনতার ক্ষোভ বিএনপির প্রতি হবে এটা স্বাভাবিক। জনতার এই প্রতিবাদকে প্রতিপক্ষ না বানিয়ে দলের ভেতরে থাকা অপরাধীদের চিহ্নিত করুন। অপরাধ ঘটার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব ও খুলনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছআহমাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম এর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মুফতী মোস্তফা কামাল, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শুয়াইব হোসেন, খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান।

সমাবেশে অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল বলেন, মাইলস্টোন স্কুলে যা ঘটেছে তা গোটা জাতীকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। শোক প্রকাশ করার ভাষাও আমরা হারিয়ে ফেলেছি। কষ্ঠ, বেদনা আর আক্ষেপে হৃদয় হাহাকার করছে। আহতরা দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠুক, নিহতরা শাহাদাতের মর্যাদায় সম্মানিত হোক।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় আমরা হতবিহব্বল। তারপরেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা যে দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থপনা করেছে তা সাধুবাদ যোগ্য।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সভাপতি আলহাজ মুফতী আমানুল্লাহর সভাপতিত্বে ও নগর সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব ও মহানগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইনের যৌথ পরিচালনায় গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন-ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছআহমাদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মুফতী মোস্তফা কামাল, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বানিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শুয়াইব হোসেন, খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান।

সমাবেশ থেকে সমাবেশে খুলনার ছয়টি আসনে ইসলামী আন্দোলনের এমপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত