ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুখবরের প্রত্যাশা

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ জুলাই ২৭ ০৬:৫৫:১৭
ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুখবরের প্রত্যাশা

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান শুল্কসংক্রান্ত আলোচনায় আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে। আলোচনার অংশ হিসেবে আগামী ২৯ জুলাই একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইতিবাচক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার আশা করছে, বর্তমানে বিদ্যমান ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার কমে ১৮-২০ শতাংশে নামতে পারে।

সূত্র জানায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শুল্ক বিষয়ক আলোচনায় মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাব না দিলেও ভার্চুয়াল ফরম্যাটে আলোচনার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরে একাধিকবার বৈঠকের সময় পরিবর্তনের আবেদন করা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটনে তিন দিনের টানা আলোচনা শেষে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মার্কিন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত নথিপত্র ও প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এসব নথিতে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপ, ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্ভাবনা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য ক্রয়ের বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা আশাবাদী যে ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো ইতিবাচক বার্তা আসবে। আমাদের দেওয়া ডকুমেন্টেশন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নয়নে নেওয়া কার্যক্রম তাদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।”

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুলা, সয়াবিন, গম এবং এয়ারক্রাফট কেনার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম কেনার একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে এবং ২৫টি বোয়িং এয়ারক্রাফট কেনার বিষয়েও অগ্রগতি হয়েছে। এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কৌশলের অংশ।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশ চট্টগ্রামের মিরসরাই ইপিজেডে ৬০০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত তুলা সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করার অবকাঠামো তৈরি হবে।

মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশকে নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধীরগতি থাকলেও আলোচনার ভিত্তিতে শুল্কহার হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার জন্য ১৯ শতাংশ এবং ভারতের জন্য ২০ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই হার ১৮-২০ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, “আমরা একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আশাবাদী যে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাবও আসতে পারে। আলোচনায় বাংলাদেশের স্বার্থ কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন হচ্ছে না; বরং আমাদের পক্ষ থেকে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা দেশীয় বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক।”

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনি কাঠামো ও শুল্কনীতি অনেক জটিল হওয়ায় শুধু লবিস্ট নিয়োগ দিয়ে শুল্ক কমানো সম্ভব নয়। ফলে কূটনৈতিক পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ ও সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত