ঢাকা, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

ইসি গঠনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ : রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ২৩ ১৯:৫৬:২৪
ইসি গঠনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ : রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতির বিষয়ে একমত হয়েছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের ১৮তম দিনের আলোচনায় এ ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়। বৈঠক শেষে বিষয়টি জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, নতুন প্রক্রিয়ায় জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে একটি বাছাই কমিটি গঠিত হবে যা নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রস্তাব করবে রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি কেবল সেই তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ দেবেন। সংবিধানে বাছাই কমিটির বিষয়টি যুক্ত করার ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমত সৃষ্টি হয়েছে।

বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পালের নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়। তবে কেবল নির্বাচন কমিশন নিয়েই আলোচনা হয়েছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে একটি কমিশন থাকবে যার নেতৃত্বে থাকবেন একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনার। এদের মনোনয়নের জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হবে যার নেতৃত্বে থাকবেন স্পিকার। সদস্য হিসেবে থাকবেন ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দল থেকে), প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি।

এই কমিটি বিদায়ী কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করবে। প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করে সর্বসম্মতভাবে মনোনয়ন চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের জন্য কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেবেন। সংসদ সচিবালয় কমিটিকে সহায়তা করবে।

বর্তমান ১১৮ অনুচ্ছেদের ২, ৪, ৫(ক) এবং ৬ উপ-অনুচ্ছেদ অপরিবর্তিত থাকবে। তবে ৫ উপ-অনুচ্ছেদে একটি নতুন অংশ যোগ করা হবে যেখানে কমিশনের জন্য সংসদের জবাবদিহিতার আওতায় একটি আইন ও আচরণবিধি প্রণয়নের বিধান থাকবে।

আলী রীয়াজ বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পূর্বের অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দিয়ে যে ঐকমত্যে পৌঁছেছে তা একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনে বড় পদক্ষেপ। কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ জানাই।”

তিনি আরও জানান, জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্য রয়েছে এবং শিগগিরই একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় সনদে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত