ঢাকা, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন, চরম আতঙ্কে ৬০০ পরিবার

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ০৯ ১৫:৫৯:১৯
পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন, চরম আতঙ্কে ৬০০ পরিবার

বর্ষা শুরু হতেই শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে অন্তত ২৬টি বসতঘর ও দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটছে আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রামের প্রায় ৬০০ পরিবার।

স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত বাঁধের প্রায় ১৩০ মিটার অংশ নদীতে ধসে পড়েছে। ভাঙনের ফলে অনেকে নিজেদের বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে প্রায় এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে ভাঙন ঠেকাতে।

২০১০-১১ অর্থবছরে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা পর্যন্ত ২ কিলোমিটার দীর্ঘ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে। তবে ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর থেকে মাঝিরঘাট এলাকায় বাঁধে ধস শুরু হয়। পরবর্তীতে বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায় এবং সেখানে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ শুরু হয়।

তবে এবার ভাঙনের মাত্রা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ঈদের দিনই পুনঃসংস্কার করা ১০০ মিটারসহ পাশের আরও ২৫০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে চলে যায়। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ভাঙনে ১৬টি বাড়ি ও ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়। ভাঙনের শঙ্কায় ১৫টি দোকান সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, “হঠাৎ ভাঙনের কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। নিজেরাই মালামাল সরিয়ে নিচ্ছি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সব শেষ হয়ে যাবে।”

সুমন হাওলাদার নামে এক বাসিন্দা জানান, “নদীর স্রোত পরিবর্তন হয়ে পাড়ের খুব কাছ দিয়ে যাচ্ছে। গত বছর থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে, এখন ভয়াবহ আকার নিয়েছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, “১৩০ মিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই সংকটপূর্ণ। জরুরি ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি।”

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ২৬টি পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। যাদের ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধসে গেছে তাদের দুই বান টিন ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। পুনর্বাসনের জন্য একটি পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছে পুরো এলাকা। স্থানীয়দের দাবি, ভাঙন ঠেকাতে দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত