ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

টেলিকম নীতিমালায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে: বিএনপি

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ০৩ ১৮:৩৮:৫৭
টেলিকম নীতিমালায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে: বিএনপি

টেলিকম খাতের জন্য প্রস্তাবিত ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি–২০২৫’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মতে, খসড়া নীতিমালাটি যেভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে, তা দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) উদ্যোক্তাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অবস্থান তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই নীতিমালা সমতাভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় উদ্যোক্তারা এতে প্রতিযোগিতার বাইরে চলে যেতে পারেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই খসড়া নীতিমালার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এতে বড় মোবাইল অপারেটরদের একাধিক খাতে প্রবেশ এবং একচেটিয়া প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে করে প্রতিযোগিতা কমে যাবে এবং আইএসপি ও অন্যান্য ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, বিদেশি মালিকানার সীমা নির্ধারণে অস্পষ্টতা থাকায় দেশের টেলিকম খাতে বিদেশি প্রভাব বাড়তে পারে, যা জাতীয় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকার এই নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি অনুসরণ করেনি। এমন একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মতামত না নেওয়াকে দায়িত্বহীনতা বলে মনে করে বিএনপি। তাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, এই নীতিমালার পূর্ণাঙ্গ আর্থিক ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ করে, সব স্টেকহোল্ডারকে অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়ন দরকার, কিন্তু তার সুফল যেন কেবল করপোরেট হস্তে না গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়, সেদিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, বড় মোবাইল অপারেটরদের একতরফা সুবিধা দিয়ে প্রযুক্তিগত আধিপত্য তৈরির চেষ্টা জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী।

বিএনপি আরও বলেছে, এই খসড়া নীতিমালায় স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড, ডিজিটাল সার্ভিস, ক্লাউড ব্যবস্থাপনা কিংবা আইওটি প্রযুক্তি সংক্রান্ত কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই, যা ভবিষ্যতের জন্য এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। এ ছাড়া এন্টারপ্রাইজ সার্ভিস ও মোবাইল অপারেটরদের ফাইবার-নির্ভর ব্যবসার পরিধি নিয়েও স্পষ্টতা নেই, যা আইনগত ও বাণিজ্যিক বিরোধের আশঙ্কা তৈরি করতে পারে।

দলটির দাবি, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এমন একটি মৌলিক খাতের নীতিমালায় তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। তারা বিশ্বাস করে, এমন একটি নীতি প্রণয়ন করা হোক, যা সব অংশীজনের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে টেকসই, সবার জন্য উপযোগী এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণে সক্ষম।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত