ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

কর ফাঁকি রোধে এনবিআরের নতুন নির্দেশনা

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ আগস্ট ১৭ ১৭:২৬:১৩
কর ফাঁকি রোধে এনবিআরের নতুন নির্দেশনা

আয়কর রিটার্ন অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং কর ফাঁকি রোধ করতে নতুন ও বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ‘আয়কর রিটার্ন অডিট নির্দেশনা, ২০২৫’ শিরোনামের এই গাইডলাইনে করদাতার রিটার্ন বাছাই থেকে শুরু করে অডিট নিষ্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

‘আয়কর আইন, ২০২৩’-এর আলোকে জারি করা এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করদাতার দাখিল করা রিটার্নে কোনো ধরনের অসঙ্গতি বা ঝুঁকি চিহ্নিত হলেই কেবল তা অডিটের আওতায় আনা হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো কর সংস্কৃতি উন্নত করা এবং কর আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, অডিটের জন্য করদাতার রিটার্ন মূলত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে একটি স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটেড) সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে, যাতে মানবীয় হস্তক্ষেপ ন্যূনতম পর্যায়ে থাকে। তবে কাগজে দাখিল করা রিটার্নের ক্ষেত্রে আপাতত দৈবচয়নের (র‌্যান্ডম) ভিত্তিতে বাছাই প্রক্রিয়া চালু থাকবে।

নির্দেশনায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান রাখা হয়েছে। যেমন:

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তিকৃত (প্রসেসড) রিটার্ন বা নতুন করদাতার প্রথম রিটার্ন অডিটের জন্য নির্বাচন করা হবে না, যদি না সেখানে সুস্পষ্টভাবে রাজস্ব ক্ষতির প্রমাণ মেলে।

একই করদাতাকে টানা তিন বছর অডিটের আওতায় আনা যাবে না।

তবে যেসব রিটার্নে লোকসান, শূন্য আয় বা অস্বাভাবিক কম আয় দেখানো হয়েছে, সেগুলো অডিটের জন্য বিবেচিত হতে পারে।

পূর্বে কখনও অডিট হয়নি, এমন রিটার্ন থেকে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ অডিটের জন্য বাছাই করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রিটার্ন নির্বাচনের পর করদাতাকে ৩০ দিনের নোটিশ দেওয়া হবে। করদাতার দেওয়া ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হলে তাকে অডিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। অন্যথায়, কর পরিদর্শক মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করবেন। এই পর্যায়ে করদাতা চাইলে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করে অডিট নিষ্পত্তি করতে পারবেন। তা না করলে আইন অনুযায়ী কর নির্ধারণ করা হবে।

ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে বেতন, ব্যাংক জমার তথ্য, বাড়ি ভাড়া, কৃষি, রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের সঙ্গে তার জীবনযাত্রার ব্যয়ের সামঞ্জস্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হবে।

কোম্পানি করদাতাদের ক্ষেত্রে নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী, টার্নওভারের সঙ্গে ব্যাংক জমার মিল, অপ্রাসঙ্গিক খরচ, উৎসে কর কর্তনের সঠিকতা এবং নতুন নেওয়া ঋণ বা দেনার তথ্য ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হবে।

এনবিআর আশা করছে, নতুন এই নির্দেশনার ফলে অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে, রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং করদাতাদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত