ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

ইরানের ভুল: রাশিয়ার উপেক্ষিত প্রস্তাব ফের আলোচনায়

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ২৩ ১৫:০৬:৪৮
ইরানের ভুল: রাশিয়ার উপেক্ষিত প্রস্তাব ফের আলোচনায়

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক পুরোনো প্রস্তাব ফের উল্লেখ করেছেন যা এখন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। পুতিন জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের সময় মস্কো যৌথ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে সেই সময় ইরান এতে আগ্রহ দেখায়নি।

রুশ বার্তা সংস্থা ‘তাস’-এর সঙ্গে এক আলোচনায় পুতিন বলেন, “আমরা ইরানকে আকাশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিলাম কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আলোচনার জায়গা তখন তৈরি হয়নি।”

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ বিমান হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের মতে, যদি ইরান রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় আগ্রহী হতো তবে এই দুর্বলতা হয়তো অনেকটাই প্রতিরোধযোগ্য ছিল।

রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “এটি একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। এর ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও প্রকট হতে পারে।”

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিও হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “ইরান আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”

যুক্তরাষ্ট্র এ হামলায় ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা—নাতানজ, ফোরদো এবং ইসফাহানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এই তিনটি স্থাপনাই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির মূল ভিত্তি।

এদিকে ইসরায়েলও ইরানের ছয়টি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, এসব হামলায় অন্তত ১৫টি উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার ধ্বংস হয়েছে। এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, এসব হামলায় মানবচালিত ও দূরনিয়ন্ত্রিত আকাশযান ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বিমানঘাঁটির রানওয়ে, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনী আরও জানায়, ইরানি বাহিনীর এফ-১৪, এফ-৫ এবং এএইচ-১ মডেলের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা এবং সামরিক অভিযানের সক্ষমতায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটেছে।

তবে ইরান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

চলমান সংকটে পুতিনের প্রত্যাখ্যাত প্রস্তাব আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সেই সুযোগ হারিয়ে ইরান এখন সামরিক ও কূটনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত