ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান ইস্যুতে আলেকজান্ডারকে স্মরণ করিয়ে দিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ১৯ ২২:৫১:০৭
ইরান ইস্যুতে আলেকজান্ডারকে স্মরণ করিয়ে দিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট

ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বেড়েছে যুদ্ধের দামামা। এমতাবস্থায় ইরানে হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এক এক্স পোস্টে তিনি লিখেছেন, "আলেকজান্ডারও পারস্যবাসীকে পরাজিত করতে পারেনি।"

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় দেওয়া তার এই পোস্ট ঘিরে তৈরি হয়েছে আলোচনা।

এর আগে সকালে আরেক পোস্টে চীনা প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "হ্যালো আমেরিকা, তোমার দিকে প্রেতাত্মা ছুটে আসছে।"

আমেরিকাকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে বলে শি আরও বলেন, "৫০০০ বছরের ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, যা আমেরিকা শিখতে অস্বীকার করে। তাদের মনে রাখা দরকার, সাম্রাজ্য শত্রুর কারণে পতন হয় না, তারা তাদের যুদ্ধযন্ত্রের অতৃপ্ত ক্ষুধার নিচে ভেঙে পড়ে।"

তিনি লেখেন লেখেন, ‘চীন জানে যে মহাশক্তিগুলো তাদের যুদ্ধযন্ত্রের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।’

তিনি পূর্বেকার রাজবংশের ধ্বংসের ইতিহাস স্মরণ করেন। যুদ্ধবাজ মনোভাব কীভাবে একটি জাতিকে ধ্বংস করেছে তার বর্ণনা দেন।

চীনা প্রেসিডেন্ট লেখেন, "খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে শক্তিশালী কিন রাজবংশ যুদ্ধরত রাজ্যগুলোকে একত্র করে। তারা মহান প্রাচীর নির্মাণ করে এবং চীনের প্রথম সম্রাটের কাছে টেরাকোটা সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করে। কিন্তু সৈন্যদের অবিরাম যুদ্ধে বাধ্য করে এবং সাম্রাজ্যের গৌরবের জন্য জনগণের রক্ত শুষে নেওয়ার পর এই রাজবংশ মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায়।"

অষ্টম শতকে পরাক্রমশালী তাং রাজবংশ দূরদূরান্তের অঞ্চল থেকে কর আদায় করত। কিন্তু অতিমাত্রায় জয়ের লোভে তাদের সেনাবাহিনী মধ্য এশিয়ার গভীরে ঢুকে পড়ে। এতে সামরিক শক্তির সম্প্রসারণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দুর্বল রাষ্ট্রগুলো আর তাদের লালসা মেটাতে না পারায় আন লুশানের বিদ্রোহে রাজধানী চাংআন জ্বলে ওঠে এবং সাম্রাজ্য ধ্বংসের পথে এগিয়ে যায়।

১৩ শতকে চেঙ্গিস খানের অজেয় অশ্বারোহী বাহিনী ইউরোপ থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করে। কিন্তু এই নিরবচ্ছিন্ন সম্প্রসারণ যত দ্রুত বিজয় এনেছিল, তত দ্রুতই সাম্রাজ্যকে ক্ষয়ের মুখে ঠেলে দেয়। ফলে এটি ইতিহাসের অন্যতম স্বল্পস্থায়ী সাম্রাজ্যে পরিণত হয়।

পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের একটাই শিক্ষা দেয়, যা আমেরিকা শিখতে চায় না। সাম্রাজ্যগুলো বাইরের শত্রুর আক্রমণে ধ্বংস হয় না। তারা ভেঙে পড়ে নিজেদের যুদ্ধযন্ত্রের অতৃপ্ত লালসার নিচে।

৭৫০টি সামরিক ঘাঁটি দিয়ে বিশ্বকে ঘিরে রাখা এবং প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার ধোঁয়ায় উড়ে যাওয়ার সঙ্গে... আপনি (মার্কিন সাম্রাজ্য) কি ইতোমধ্যে আপনার প্যারেডে সেই প্রেতাত্মার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন?

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত