ঢাকা, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ করেছে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি

দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদী মন্দা ও আস্থার সংকটের মধ্যেই তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি—বিচ হ্যাচারি লিমিটেড ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড—বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ করেছে। গত ছয় মাসে এই দুই কোম্পানির শেয়ার দামে নজিরবিহীন পতন হয়েছে। যার ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনে পথে বসে গেছেন।
বিচ হ্যাচারি: ১২৫ টাকা থেকে ৪২ টাকায়
চলতি ২০২৫ সালের ০১ জানুয়ারি বিচ হ্যাচারির শেয়ার দাম ছিল ৯৩ টাকা। এরপর ১১ মার্চ এটি বেড়ে পৌঁছে যায় ১২৫ টাকায়। তারপর থেকেই ধারাবাহিক পতন। বর্তমানে দাম নেমে এসেছে ৪২ টাকার নিচে—অর্থাৎ প্রায় ৬৬ শতাংশের বেশি পতন ঘটেছে সর্বোচ্চ মূল্য থেকে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২৪ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। তারপর চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বড় ধরনের মুনাফা করেছে। কিন্তু মুনাফার খবর আসার দিন থেকেই শেয়ারটির দাম আকাশ থেকে একেবারে মাটিতে পড়তে থাকে। শেয়ারটির দামে এমন বড় ধস বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ: ৯৬ টাকা থেকে ৪৩ টাকায়
একই সময়ে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দাম ০১ জানুয়ারিতে ছিল ৯৩ টাকায়। যা ১৩ জানুয়ারি ৯৬ টাকার ওপরে লেনদেন হয়। তারপর ধারাবাহিকভাবে পতন। বর্তমানে এটি ৪৩ টাকায় নেমে এসেছে, যা ৫৫ শতাংশের বেশি পতন।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ সর্বশেষ ২০২৪ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিকেও কোম্পানিটি আগের অর্থবছরের তুলনায় বেশি মুনাফায় রয়েছে। তারপরও হঠাৎ বড় পতন বিনিয়োগকারীরা মানতে পারছেন না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু কোম্পানির মৌলিক ভিত্তি নয়, বাজারের সামগ্রিক মনস্তত্ত্ব বড় বিনিয়োগকারীদের আচরণ এবং সর্বোপরি বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক অনেক সময় শেয়ার দামে বড় প্রভাব ফেলে। বিনিয়োগকারীরা যখন বাজারে অনিশ্চয়তা অনুভব করেন, তখন মৌলভিত্তি ভালো হলেও তারা শেয়ার বিক্রি করে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজেন, ফলে দর অস্বাভাবিকভাবে পড়ে যায়।
বিশ্লেষকরা আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শেয়ারবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের আগে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ, কোম্পানির আর্থিক ও মৌলিক বিশ্লেষণ এবং আবেগের পরিবর্তে তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুবই জরুরি।
পরিশেষে বলা যায়, বিচ হ্যাচারি ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের মতো ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে যদি এভাবে অস্বাভাবিক পতন ঘটতে থাকে, তাহলে তা বিনিয়োগকারীদের আস্থার ওপর আরও চাপ তৈরি করতে পারে। তবে কোম্পানির মৌলভিত্তি ঠিক থাকলে দীর্ঘমেয়াদে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাও অস্বীকার করা যায় না। বিনিয়োগকারীদের তাই মুহূর্তে ধৈর্য ও বিশ্লেষণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে উৎসাহ দিচ্ছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ: এক কোম্পানির শেয়ার কিনলেন উদ্যোক্তারা
- পাঁচ কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসসি
- শেয়ার কারসাজিতে ১৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ২.৫২ কোটি টাকা জরিমানা
- মৌসুমী-হাসান জাহাঙ্গীরের বিয়ে: ওমর সানীর ‘জুতাপেটা’র হুমকি
- বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ করেছে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি
- বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেয়ায় ক্যাটাগরি উন্নতি
- বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দ্যুতি ছড়াচ্ছে ১৩ ‘বনেদি’ কোম্পানি
- শেয়ারবাজার বাঁচাতে অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি
- শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চান বিনিয়োগকারীরা
- বড় আন্দোলনে নামছে ৩ 'দল'
- মোবাইল কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে বিশেষ প্রণোদনা
- শেয়ারবাজারের ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা
- ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃ'ত্যু ৬
- মুনাফা বেড়েছে বিবিধ খাতের ৬ কোম্পানির