ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করেছে দুদক

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুন ০৪ ১৫:৪৯:৪৩
টিউলিপের ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করেছে দুদক

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর এবার তার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ রিজওয়ান সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের গতি বেড়েছে। সম্প্রতি টিউলিপের ২০০৬-২০০৭ থেকে ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ১৩ বছরের আয়কর নথি জব্দ করেছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে আদালতের নির্দেশে রাজধানীর পুরানা পল্টনে কর অঞ্চল-৬ এর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে এসব নথি জব্দ করা হয়। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

দুদক সূত্র জানায়, জব্দ করা নথির মধ্যে রয়েছে টিউলিপের বিভিন্ন করবর্ষের আয়কর রিটার্নসহ মোট ৮৭টি পৃষ্ঠা। এর মধ্যে ২০১৫-১৬ করবর্ষে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট হেবা দলিলের মাধ্যমে তার ছোট বোনের নামে হস্তান্তরের তথ্যও রয়েছে। ২০১৮-১৯ করবর্ষের পর থেকে আর কোনো আয়কর রিটার্ন দাখিলের তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ অভিযান টিউলিপের বিরুদ্ধে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগের তদন্তের অংশ। ওই অভিযোগে দুদক গত ১৫ এপ্রিল টিউলিপসহ রাজউকের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে। এতে বলা হয়, গুলশানের একটি বিতর্কিত প্লট ইস্টার্ন হাউজিংয়ের অনুকূলে অবৈধভাবে হস্তান্তর করার অনুমোদন দেওয়া হয়, যা সরকারের ইজারা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে।

এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, এ ধরনের অবৈধ হস্তান্তরের বিনিময়ে টিউলিপ সিদ্দিক বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেন, যা শাস্তিযোগ্য দুর্নীতি হিসেবে গণ্য হয়।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ১৯৬৩ সালে বরাদ্দ পাওয়া গুলশানের ওই প্লটটি সরকারি নীতিমালার বাইরে আমমোক্তার চুক্তির মাধ্যমে একাধিকবার হাতবদল হয় এবং ইস্টার্ন হাউজিং সেখানে ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। যদিও প্লটটি এখনো সরকারি ইজারা শর্তে রাজউকের অধীনে রয়েছে।

এর আগে পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির এক মামলায় টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করে আদালত।

দুদকের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের টিম শেখ হাসিনার পরিবারের বিভিন্ন সম্পদ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ সাবেক মন্ত্রী, আমলা ও ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলায় চার্জশিট দাখিলের পর তদন্তের পরিধি আরও বিস্তৃত হয়েছে।

এই প্রক্রিয়ায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত ও মামলাগুলো বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য—দুই জায়গাতেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত