ঢাকা, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
অন্তর্বর্তী সরকার আগাম নির্বাচনের বিপক্ষে : দ্য ডিপ্লোম্যাটের বিশ্লেষণ

এশিয়া-প্যাসিফিক ভিত্তিক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাট এক নিবন্ধে দাবি করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইচ্ছাকৃতভাবে আগাম নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে ছাত্র নেতৃত্বাধীন নবগঠিত দল এনসিপিকে সংগঠিত হওয়ার সময় দিচ্ছেন।
নিবন্ধে বলা হয়, ৯ এপ্রিল ঢাকায় মডেল মেঘনা আলমকে নিরাপত্তা বাহিনী তাঁর বাসা থেকে আটক করে। ফেসবুক লাইভে গ্রেপ্তারের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ার পরও সরকার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় এ বিষয়ে নিশ্চুপ ছিল। এক মাস পর মুক্তি পেয়ে নেত্র নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেঘনা অভিযোগ করেন গ্রেপ্তারের পেছনে ছিলেন ইউনূসের বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী। পরবর্তীতে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে তিনি সাক্ষাৎকারটি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করেন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট দাবি করেছে, মেঘনা শুধু একজন উদাহরণ—বর্তমানে অনেকেই সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছেন, যারা ভিন্নমত প্রকাশ করছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয় এনসিপি নেতা সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করার কারণে সরকারি কর্মীদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে এবং এক নারী শিক্ষককে নারীর সম্পত্তির অধিকারে সমর্থন জানিয়ে লেখা লেখার কারণে বদলি করা হয়েছে।
সাময়িকীটি উল্লেখ করে ড. ইউনূসের সমর্থকেরা তাঁকে ভবিষ্যতে "ফ্যাসিবাদের উত্থান" রোধে সংস্কারের নেতা হিসেবে তুলে ধরছেন। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো সরকারের আচরণকে তার বিপরীত বলে প্রমাণ করে। এতে প্রশ্ন ওঠে—এই সংস্কারপ্রক্রিয়া কি সত্যিই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় উৎসর্গীকৃত নাকি তা এনসিপিকে সময় দেওয়ার কৌশল?
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব নেওয়ার ৯ মাস পার হলেও গণতান্ত্রিক উত্তরণের রোডম্যাপ কিংবা রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনে তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে সাময়িকীর দাবি। বরং ক্ষমতার কেন্দ্রে এনসিপিকে একচেটিয়াভাবে জায়গা দেওয়ার মাধ্যমে অন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
বিশেষ করে সংস্কার কমিশন গঠনে এনসিপির ছাত্রনেতারা সরাসরি যুক্ত থাকলেও অন্যান্য রাজনৈতিক দল কেবল তাদের প্রস্তাব জমা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে যেগুলোর বেশিরভাগই উপেক্ষিত হয়েছে।
এনসিপির প্রভাবের উদাহরণ হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত তুলে ধরা হয়েছে। সাময়িকীর ভাষ্য এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার একদিন আগে এনসিপি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যদিও সে সময় অন্য রাজনৈতিক দলদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। একই সময় দক্ষিণ ঢাকার মেয়র হিসেবে বিএনপিপন্থী এক নেতাকে আদালত স্বীকৃতি দিলেও সরকার তা প্রত্যাহার করে যা নিয়ে প্রতিবাদ হয়।
সাময়িকীটি আরও জানায়, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবির জবাবে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস তা উপেক্ষা করেছেন এবং বরং বিএনপির নির্বাচনকেন্দ্রিক চাপ প্রয়োগের সমালোচনা করেছেন।
এনসিপির প্রতি সরকারের পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং অন্যান্য দলের মতামতের অবমূল্যায়ন বর্তমানে একটি গভীর আস্থার সংকট তৈরি করেছে। নুরুল হক নুর যিনি বর্তমানে গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি অভিযোগ করেছেন—সরকার রোডম্যাপ প্রকাশ করছে না কারণ তারা এনসিপিকে সংগঠিত করতে চাইছে।
দ্য ডিপ্লোম্যাটের মন্তব্য অনুযায়ী, ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার একদিকে গণতন্ত্র ও সংস্কারের কথা বলছে অন্যদিকে গণমাধ্যম, মতপ্রকাশ ও বিরোধী দল দমনের মাধ্যমে নিজ অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- শিক্ষা ক্যাডারে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস সার্কুলার প্রকাশে পিএসসির চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- মৌসুমী-হাসান জাহাঙ্গীরের বিয়ে: ওমর সানীর ‘জুতাপেটা’র হুমকি
- ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের শেয়ারবাজার: দৃশ্যমান হচ্ছে ইতিবাচক পদক্ষেপ
- ভারতে রেড অ্যালার্ট জারি!
- ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে দুই কোম্পানি
- ছাত্রদল সভাপতির পদ হারিয়েছেন রাকিব! যা জানা গেল
- মূলধন বাড়াতে রাইট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত
- ইপিএস প্রকাশ করেছে তালিকাভুক্ত ১৪ কোম্পানি