ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম ব্যতীত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ মে ২৫ ১৮:৪৮:১৬
জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম ব্যতীত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা

ডুয়া ডেস্ক: আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এবং ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ছাড়া কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার (২৬ মে) থেকে শুরু হবে এই কর্মবিরতি।

আজ রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এই কর্মসূচি ঘোষণা করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, উপ কমিশনার আব্দুল কাইয়ুম এবং উপ কর কমিশনার রইসুন নেসা।

এ সময় বলা হয়, ‘দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখা এবং অর্থবছরের শেষ প্রান্তে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে আমাদের মূল চারটি দাবি পূরণের বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা প্রদান করার জন্য আমরা সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমাদের কর্মসূচির ফলে করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।'

তারা আরও বলেন, ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ মনে করে তাদের এই সাময়িক ত্যাগ দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে ও রাজস্ব ব্যবস্থার টেকসই সংস্কারে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। রাজস্ব ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী সংস্কারের ক্ষেত্রে আমাদের এই যৌক্তিক দাবিগুলো সরকার কী কারণে, কার প্রভাবে বা কোন অজুহাতে এখনো বাস্তবায়ন করছে না, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। যেহেতু আমাদের চারটি সুনির্দিষ্ট দাবি পূরণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে অদ্যাবধি সুস্পষ্ট ঘোষণা প্রদান করা হয়নি, সেহেতু আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিল, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে দ্রুত অপসারণ, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া ও সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সব অংশীজনের মতামত গ্রহণ করে একটি উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার নিশ্চিত করা।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের নেতারা বলছেন, “আমরা শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সংগতি রেখে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী, স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত রাজস্ব এজেন্সি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে আসছি। সেইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব নীতি পৃথকীকরণের পরিকল্পনার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা জানাতে চাই, রাজস্ব আহরণের মতো একটি জটিল ও বিশেষায়িত ক্ষেত্রে নীতি প্রণয়নের জন্য কর, কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের পেশাগত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়ে এবং সব অংশীজনের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত রাজস্ব নীতি প্রতিষ্ঠান গঠনের জন্য আমরা দাবি করে আসছি। অধ্যাদেশে জারি করা রাজস্ব মডেলের অকার্যকারিতার বিষয়ে সিভিল সোসাইটিসহ সমাজের অন্যান্য অংশীজনও আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে। আমরা আশা করছি, সরকার এ অধ্যাদেশ বাতিল করে সমাজের অংশীজনদের মতামত ও আমাদের অভিজ্ঞতালব্ধ পর্যবেক্ষণকে পুনর্বিবেচনা করবে।”

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই, রাজস্ব সংস্কারের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে এনবিআরের চেয়ারম্যান চরম অসহযোগিতা করে আসছেন এবং সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী প্রশাসনের এ কর্মকর্তা তার পূর্ববর্তী পদে থাকা অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ জুলাই পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে কর ফাঁকি বিষয়ে সহযোগিতা করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ অডিট কার্যক্রম বন্ধ করেন। এছাড়াও কিছুদিন আগে অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিতভাবে ভ্যাট হার বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেন। বর্তমানে বিভিন্ন উপায়ে তিনি সরকারের সঙ্গে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের গঠনমূলক ও সার্থক আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চরূপে অসহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছেন।”

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত