ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার গার্মেন্টস শিল্পে বড় ধাক্কা

ডুয়া ডেস্ক : বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার গার্মেন্টস শিল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম প্রধান বাজার। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে এই শিল্প এখন বড় সংকটে পড়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি ছিল তৈরি পোশাক খাত। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই খাতের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, নতুন শুল্কনীতির আওতায় শ্রীলঙ্কাকে ৪৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশকে ৩৭ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এতে দুই দেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। শ্রীলঙ্কার জয়েন্ট অ্যাপারেল অ্যাসোসিয়েশন ফোরামের পরামর্শক তুলি কুরাই এই শুল্ক বৃদ্ধিকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "৪৪ শতাংশ শুল্ক আমাদের পোশাক শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা।"
বিশ্বের প্রায় ৮৫ শতাংশ মার্কিন পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে গড়ে ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মার্কিন ভোক্তাদের ওপরও প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে, যা দেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশ। গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত ৪০ লাখের বেশি মানুষের বেশিরভাগই নারী, যারা দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে, যেখানে ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, তবে নতুন শুল্কনীতি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, "বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখন এই শুল্কযুদ্ধ নতুন করে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।"
বাংলাদেশের অনেক পোশাক কারখানা পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর। এসব কারখানার উৎপাদনের ৮০ থেকে ১০০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়। ফলে এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে তাদের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে।
শ্রীলঙ্কার গার্মেন্টস খাতে তিন লাখের বেশি মানুষ কাজ করেন, যেখানে নাইকি ও ভিক্টোরিয়া’স সিক্রেটের মতো ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি হয়। দেশটির মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেকই আসে পোশাক শিল্প থেকে এবং এর উল্লেখযোগ্য অংশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়ে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে তাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এই শিল্প এখন গভীর সংকটে পড়েছে। শুল্কনীতি পরিবর্তন না হলে দুই দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাভেলোর শেয়ার কারসাজি: তিন বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে ইতিহাস গড়লেন ‘ছাগল-কাণ্ডের’ সেই মতিউর
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- শেয়ারবাজারে হঠাৎ দরপতন, নেপথ্যে এনবিআরের চিঠি
- ডিভিডেন্ড বৃদ্ধির আলোচনায় জ্বালানি খাতের ১১ কোম্পানি
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড দোলাচলে তথ্যপ্রযুক্তির ৮ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- সোনালী পেপারের কারসাজিতে জেনেক্স ইনফোসিসের পরিচালকদের জরিমানা
- চার কোম্পানির আর্থিক অনিয়মের দায়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে ৬ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান