ঢাকা, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বাঙালির গৌরবময় বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

২০২৫ ডিসেম্বর ০১ ১০:১৭:৪৫

বাঙালির গৌরবময় বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

মো: আবু তাহের নয়ন:আজ ১ ডিসেম্বর। শুরু হলো গৌরবময় বিজয়ের মাস—ডিসেম্বর, যা বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মহিমান্বিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে এই মাসটি স্মরণীয়, কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের জন্মের আভাস এ মাসেই স্পষ্ট হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ বাঙালির আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় বিজয়, যা বাঙালি জাতির ইতিহাসে গৌরবের চূড়ান্ত মুহূর্ত। এই বিজয় শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা নয়, বরং বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নের বাস্তবায়নও বয়ে আনে।

ডিসেম্বর মাসের নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ত্বরান্বিত হয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদাররা বীর বাঙালিদের সামনে আত্মসমর্পণের পথ খুঁজতে বাধ্য হয়েছিল। একপর্যায়ে ঢাকা শহরের রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনারা নতিস্বীকার করে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত এই বিজয় পরম কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

বিশেষভাবে, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দিল্লির রাজ্যসভার অধিবেশনে এক বক্তৃতায় উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানি সেনা অপসারণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণই সমস্যার শ্রেষ্ঠ সমাধান।” ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ভারতীয় ও বাংলাদেশি জনগণকে সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশের ভেতরে গেরিলা আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নিরীহ জনগণের ওপর আরও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পারের জিঞ্জিরায় সারিবদ্ধভাবে ৮৭ জনকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঘোষণা করেন, পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং এই লড়াই বাঙালিকে স্বাধীনতা অর্জন থেকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। তবে সেই ষড়যন্ত্রও বাঙালিকে বিজয় অর্জন থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়নি।

১ ডিসেম্বরের এই দিনটি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ঘটনা-বহুল ও স্মরণীয়। এটি শুধুই যুদ্ধের গল্প নয়, বরং বাঙালি জাতির স্বাধীনতার প্রতীক, সাহস ও ত্যাগের চিহ্ন। দেশের সন্তানরা যেভাবে আত্মত্যাগ করেছেন, তা আজও নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। এই দিনে আমরা স্মরণ করি সেই বীর বাঙালিদের, যারা জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার আলো দেখিয়েছেন।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত