ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: ভিসা রিফিউজ এড়াতে শিক্ষার্থীদের করণীয়

আসাদুজ্জামান
আসাদুজ্জামান

রিপোর্টার

২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৮:২১:৩০

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: ভিসা রিফিউজ এড়াতে শিক্ষার্থীদের করণীয়

অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। দেশটির মানসম্মত শিক্ষা, আধুনিক ক্যাম্পাস সুবিধা এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়িয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা রিফিউজের হার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার হোম অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আবেদনকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য স্পষ্ট না হলে বা আর্থিক সক্ষমতা যথাযথভাবে প্রমাণিত না হলে ভিসা অনুমোদন পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। ফলে অনেক শিক্ষার্থী প্রথমবারে ভিসা রিফিউজড হচ্ছেন।

১. “জেনুইন স্টুডেন্ট” না মনে হলে

২০২৪ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়া নতুন Genuine Student (GS) মূল্যায়ন চালু করেছে। এর অধীনে ভিসা অফিসাররা যাচাই করেন—

আবেদনকারী সত্যিই পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন, নাকি অন্য উদ্দেশ্য আছে;

নির্বাচিত কোর্সটি পূর্ববর্তী পড়াশোনা বা ক্যারিয়ারের সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা;

পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার বাস্তব পরিকল্পনা আছে কি না।

এই পর্যায়েই সবচেয়ে বেশি আবেদন আটকে যাচ্ছে।

২. আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণে অস্পষ্টতা

অনেক আবেদনকারী ফান্ডিং প্রমাণ দিতে সমস্যায় পড়েন। স্পনসরের পেশা, আয়, ব্যাংক স্টেটমেন্টের উৎস সবকিছু এখন খুঁটিয়ে দেখা হয়। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে এক বছরের টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচ মেটানোর মতো অর্থ থাকতে হবে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে (মে ২০২৪) বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া ভুয়া রিক্রুটমেন্ট এবং নকল আর্থিক ডকুমেন্ট ঠেকাতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে।

৩. SOP ও GTE-এর অসঙ্গতি

ভিসা অফিসাররা এখন AI ও সফটওয়্যার ব্যবহার করে SOP/GTE যাচাই করেন। ইন্টারনেট থেকে কপি করা লেখা সহজেই ধরা পড়ে। আবেদনকারীদের পরামর্শ—

নিজের ভাষায়, নিজের গল্পে লিখুন;

কেন অস্ট্রেলিয়া বেছে নিয়েছেন;

কোর্সটি ভবিষ্যতে কীভাবে কাজে লাগবে;

দেশে ফিরে কী করবেন।

অতিরিক্ত নাটক বা বড় প্রতিশ্রুতির চেয়ে আন্তরিক ও বাস্তব লেখা বেশি গুরুত্ব পায়।

৪. ভুয়া বা অসম্পূর্ণ ডকুমেন্ট

ফেক আইইএলটিএস রিপোর্ট, জাল ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা অনির্ভরযোগ্য সার্টিফিকেট দিলে পুরো আবেদন বাতিল হয়ে যায়। এমনকি ভবিষ্যতে পুনরায় আবেদন করলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

৫. ভুল এজেন্ট বা পরামর্শক

সব এডুকেশন এজেন্ট বিশ্বাসযোগ্য নয়। ভুলভাবে ডকুমেন্ট জমা দিলে শেষ পর্যন্ত ক্ষতি শিক্ষার্থীরই হয়। তাই সর্বদা MARA অনুমোদিত এজেন্ট বা অভিজ্ঞ পরামর্শকের সঙ্গে কাজ করা জরুরি।

করণীয়

বিশেষজ্ঞদের মতে, সফল ভিসা পেতে হলে—

সঠিক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে হবে যা শিক্ষাগত ও পেশাগত লক্ষ্য পূরণে সহায়ক;

আর্থিক প্রমাণ পরিষ্কার ও যাচাইযোগ্য রাখতে হবে;

SOP ও GTE নিজের অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পরিকল্পনা অনুযায়ী লিখতে হবে;

রিফিউজ হলে কারণ বিশ্লেষণ করে পরবর্তীবার ভুল সংশোধন করতে হবে।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বৃত্তি এর অন্যান্য সংবাদ