ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কড়া নিরাপত্তায় রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১০:০৬:০২

কড়া নিরাপত্তায় রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। এই মামলায় পলাতক রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।তাদের অনুপস্থিতিতেই আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

আজ বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এই রায় হওয়ার কথা রয়েছে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

সকাল ৯টা ১০-এর পর কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। এই মামলায় আজই শেষবারের মতো তাকে আনা হয়েছে। শেখ হাসিনা ও কামাল পলাতক থাকলেও সাবেক এই আইজিপি প্রায় এক বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। তবে তিনি রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন, যার ফলে তার শাস্তির বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা চাওয়া হয়েছে।

এদিকে, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে গতকাল (রোববার) সন্ধ্যা থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জনসাধারণের চলাচলও সীমিত করা হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিনটি ধার্য করা হয়েছিল। মামলার মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-জেরা সম্পন্ন হয় এবং ৯ কার্যদিনে প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিখণ্ডন চলে। ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

যুক্তিতর্কে প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছে। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় মামলার অন্যতম আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, যদিও তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ খালাস চেয়েছিলেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের দৃঢ় বিশ্বাস যে হাসিনা-কামালও খালাস পাবেন।

এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার এবং ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই মামলার প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত