ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২

নাশকতার আ’তঙ্কে নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন

২০২৫ নভেম্বর ১১ ১২:১৬:৫৩

নাশকতার আ’তঙ্কে নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক:সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতা ও নাশকতার আশঙ্কায় দেশের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ তিনজন আহত হওয়ার পর থেকেই ইসি সচিবালয়সহ সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ বেড়েছে। গুরুতর আহত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনকে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৫ অক্টোবর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর সারাদেশে একই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে থাকে।

এই প্রেক্ষাপটে ২৮ অক্টোবর নির্বাচন ভবন ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ইসি। চিঠিতে বলা হয়, অফিস সময়ের বাইরে নির্বাচন ভবনের আশপাশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলতে থাকায় নাশকতার ঝুঁকি বেড়েছে; তাই ওই এলাকায় রাতের কার্যক্রম সীমিত রাখা ও টহল জোরদারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নির্বাচনে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, “আসন্ন নির্বাচনে অনেক প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। তবে আন্তরিকতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সেগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা নয়, তাদের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধই হবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের চাবিকাঠি।”

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন কঠিন হবে না। প্রিজাইডিং অফিসারদের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা নিশ্চিত করাই সফল নির্বাচনের মূল শর্ত।

অন্য কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে—যেমন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, পরাজিত প্রার্থীর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা, কিংবা পুরনো অনিয়মের পুনরাবৃত্তি।” এসব পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বস্তরে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের আগে অপরাধ দমন করা গেলে পরিবেশ সুষ্ঠু থাকবে। নারীদের প্রতি সাইবার বুলিং, ভয়েস ক্লোন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো, সংখ্যালঘু ও জঙ্গিবাদ ইস্যু ব্যবহার করে উত্তেজনা তৈরির বিরুদ্ধে আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।” তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী গ্রেফতার, সীমান্ত ও সমুদ্রপথে কঠোর নজরদারি, তফসিল ঘোষণার পর চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নভেম্বরে সব প্রস্তুতি শেষ করে তফসিল ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে সংস্থাটি।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত