ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

চীনের অস্ত্র সহায়তায় জান্তার নিয়ন্ত্রণে ফিরছে শান রাজ্য

২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১৭:০৭:৪৪

চীনের অস্ত্র সহায়তায় জান্তার নিয়ন্ত্রণে ফিরছে শান রাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :চীনের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও উন্নত প্রযুক্তির জোরে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী হারানো অঞ্চলগুলো পুনর্দখলে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তারা টানা বিমান হামলা ও ড্রোন অভিযানের মাধ্যমে শান রাজ্যের দুটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর — কিয়াউকমে ও হিসপাও — পুনর্দখল করেছে।

মাসের পর মাস টা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) শহরগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখলেও, মাত্র তিন সপ্তাহের সামরিক অভিযানে জান্তা বাহিনী কিয়াউকমে পুনর্দখল করে নেয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরজুড়ে ভয়াবহ বিমান হামলা ও বোমা বর্ষণের ফলে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও অবকাঠামোর বড় অংশ ধ্বংস হয়েছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে বহু সাধারণ মানুষ। চলতি বছর মিয়ানমারে অন্তত এক হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ধারণা।

বিশ্লেষকদের মতে, জান্তা বাহিনীর এই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে মূলত চীনের সহায়তায়। বেইজিং প্রকাশ্যে ডিসেম্বরের নির্ধারিত নির্বাচনের জান্তা পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে এবং উন্নতমানের ড্রোন, ভারী অস্ত্র ও গোয়েন্দা প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। বর্তমানে সেনাবাহিনী হাজার হাজার ড্রোন ব্যবহার করছে, যার নির্ভুল বোমা বর্ষণে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা একের পর এক দখলে আসছে।

অন্যদিকে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিভাজন ও সমন্বয়ের অভাব পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ও অন্যান্য জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন একযোগে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হচ্ছে। চীনের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও প্রযুক্তি রপ্তানিতে বিধিনিষেধের কারণে তাদের অস্ত্র ও ড্রোন সংগ্রহও কঠিন হয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, চীনের এই ভূমিকা মিয়ানমারের ক্ষমতার ভারসাম্যকে সম্পূর্ণভাবে জান্তার পক্ষে ফিরিয়ে দিয়েছে। এর ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর প্রভাব বাড়লেও, সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হচ্ছে দেশের নিরীহ সাধারণ মানুষ, যাদের জন্য এই যুদ্ধ এখন এক অনন্ত দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত