ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২
অনিশ্চয়তার পথে একই সময়ে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির যাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা দর কমে অনিশ্চয়তার পথে যাত্রা করেছে একই বছর তালিকাভুক্ত হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাতের দুই কোম্পানি। ধারাবাহিকভাবে দর কমায় ওই দুই কোম্পানির শেয়ার দর তলানিতে এসে ঠেকেছে। কোম্পানি দুটি হলো- ইন্দোবাংলা ফার্মা এবং সিলভা ফার্মা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইতিমধ্যে সিলভা ফার্মার দর ফেসভ্যালুর নিচে নেমে যাওয়ার পর আজ আবারও ফেসভ্যালুল উপরে এসেছে। আর ইন্দোবাংলা ফার্মা ফেসভ্যালুর নিচে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এর পতন রুখতে না পারলে খুব শিগগিরই ফেসভ্যালুর নিচে নেমে যাবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ইন্দোবাংলা ফার্মার শেয়ার দর গতকাল রোববার ৩০ পয়সা বা ২.৭০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৮০ পয়সায়, যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দর ছিল ১৩ টাকা ৭০ পয়সা। চলতি মাসের শুরু থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার দর ধারাবাহিকভাবে কমছে। এভাবে আর দুই একদিন পতন হলেই কোম্পানিটি ফেসভ্যালুর নিচে নেমে যাবে।
উল্লেখ্য, আজ (সোমবার) কোম্পানিটির শেয়ার দর ১ টাকা বা ৯.২৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৮০ পয়সায়।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ধারাবাহিকভাবেই কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে আসছে। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে ৩ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ৯ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে। তিন প্রান্তিক বা ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৭ পয়সা।
৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৩ টাকা ৪৩ পয়সা। এছাড়া, একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ পয়সা কম।
২০২৪ অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ০.১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।
২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ১৫০ কোটি টাকা ও ১১৬ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর কোম্পানিনিটির বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ৪১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৬২ লাখ ৫ হাজার ১৭৮টি। যার মধ্যে ২৪.৪৩ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৭.৪০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৫৮.১৭ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
এদিকে, সিলভা ফার্মার শেয়ারদর গতকাল রোববার ৪০ পয়সা বা ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৬০ পয়সায়, যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দর ছিল ১২ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ারদর ধারাবাহিকভাবে কমছে। ১৫ কর্মদিবসের ধারাবাহিক পতনের কারণে কোম্পানিটি আজ ফেসভ্যালুর নিচে নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬০ পয়সা বা ৬.২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ২০ পয়সা।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ধারাবাহিকভাবেই কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে আসছে। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে ২৪ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ১৪ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে। ৩ প্রান্তিক বা ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৭ পয়সা।
৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৫ টাকা ৯১ পয়সা। এছাড়া, একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২৬ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ পয়সা বেশি।
২০২৪ অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।
২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ১৫০ কোটি টাকা ও ১৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর কোম্পানিনিটির বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ৮৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৬৫ লাখ। যার মধ্যে ৪৫.২১ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৬.২৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ০.০১ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ৩৮.৫৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে কোম্পানি দুটির দর তলানিতে নেমে আসাটা কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তালিকাভুক্তির সময় কোম্পানি দুটি সব শর্ত মেনে প্রসপেক্টাসে মুনাফা দেখিয়েছিল। তাহলে এখন কেন লোকসানে নেমে এসেছে? এজন্য কোম্পানিগুলোর কাছে জবাব চাওয়া উচিত। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নিশ্চুপ রয়েছে। কোম্পানিগুলো প্রান্তিক প্রতিবেদন দেখিয়ে আসছে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় তার সত্যতাও যাচাই করা উচিত। তা-না হলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি আরো ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এসএখান/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ৪০ বছরের ইতিহাসে ডিভিডেন্ডে নজির ভাঙল এপেক্স ট্যানারি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণায় রেকর্ড ভাঙ্গল লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স!
- শেয়ারবাজারে হাহাকার, ৮ দিনে ৪২ হাজার কোটি টাকা গায়েব!
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু এগ্রো
- একদিনে 'এ' ক্যাটাগরিতে ফিরল দুই কোম্পানি
- পতন তান্ডবে শেয়ারবাজারে ছোটদের কফিনেও বড় পেরেক!
- বস্ত্র খাতের ৮ কোম্পানিতে বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১৭ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- মার্জিন ঋণ আতঙ্কে হঠাৎ ধস নামলো শেয়ারবাজারে!
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে বিএসআরএম লিমিটেড
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানি
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীল রাখতে এক হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে আইসিবি
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ৮ কোম্পানি
- ১৪ অক্টোবর: এক নজরে শেয়ারবাজারের ২০ খবর
- ১০ কোম্পানির কারণে ৩ মাস পেছনে গেল শেয়ারবাজার