ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২
মামলায় অভিযুক্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) মামলার আসামিদের রাজনৈতিক ও সরকারি দায়িত্বে থাকা কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে। সরকারের জারি করা গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে আইসিটিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন হয়েছে, তারা কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশ নিতে বা সরকারি পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এর সংশোধনের মাধ্যমে এই বিধান কার্যকর করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন সোমবার অধ্যাদেশ জারি করে আইনে নতুন ২০(গ) ধারা সংযোজন করেন। অধ্যাদেশটি জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়েছে।
নতুন ধারায় বলা হয়েছে, আইসিটিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল হয়েছে, তারা সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না এবং সরকারি দায়িত্বও পালন করতে অযোগ্য হবেন। এ ধারা স্থানীয় সরকার সংস্থার চেয়ারম্যান, মেয়র, কমিশনার বা প্রশাসক পদেও প্রযোজ্য। তবে যদি পরবর্তীতে কেউ ট্রাইব্যুনাল থেকে অব্যাহতি পান বা খালাসপ্রাপ্ত হন, তাদের ওপর থেকে এই অযোগ্যতা তুলে নেওয়া হবে।
আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এই সংশোধনের প্রয়োজন প্রকৃত সময়ে এসেছে। দেশ বর্তমানে বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
তবে আইন সংশোধনের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “এই পদক্ষেপ ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত একজন ব্যক্তি নির্দোষ। শুধুমাত্র অভিযোগ দায়ের হওয়ার ভিত্তিতে কারও রাজনৈতিক বা সরকারি দায়িত্বে অংশগ্রহণ সীমিত করা ন্যায়সঙ্গত নয়।”
শাহদীন মালিক আরও বলেন, “ধরা যাক আমি আর আপনি নির্বাচনে প্রার্থী। আমি চাইলে আপনার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করতে পারি। মামলার বিচার শুরু হওয়ার আগে আপনাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে, অথচ নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। এটি কি ন্যায়বিচার?” তিনি এই সংশোধনকে ‘পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়েছেন।
সংশোধিত খসড়াটি ৪ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হয়। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার তখন মন্তব্য করেন, আইসিটি আইনের অভিযুক্তরা সাধারণ অপরাধীর মতো নয়, তারা বিপজ্জনক অপরাধী। সংবিধানের ৪৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের কিছু অধিকার সীমিত।
এ পর্যন্ত জুলাই বিদ্রোহ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি মামলায় ৬৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আজগর আলী, পুলিশ ও প্রশাসনের অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তারা।
প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, বেশ কয়েকটি মামলার বিচার প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং বড় মামলাগুলোর অভিযোগপত্র এই মাসেই দাখিল ও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হবে।
ইএইচপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের যুগান্তকারী ঘোষণা
- ‘জেড’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- ডুবছে ওষুধের দুই কোম্পানি, বিনিয়োকারীদের কপালে চিন্তার ভাজ
- সাত কোম্পানির শেয়ারে কারসাজির গন্ধ!
- RSI এলার্ট: ১০ শেয়ারে বিপদ সংকেত
- শেয়ারবাজারের কোম্পানিতে কারসাজির গন্ধ! তদন্তে নেমেছে বিএসইসি
- উৎপাদন বন্ধ চার কোম্পানির শেয়ার নিয়ে সতর্কতা জারি
- ঢাবি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে জাপান, আবেদন করবেন যেভাবে
- জেডে নেমে তিন শেয়ারের ধস, বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কা
- মশিউর সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় বিএসইসির বড় পদক্ষেপ, আসছে নতুন নিয়ম
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে ২ কোম্পানি