ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২
প্রবাসী আয়ে ইসলামী ব্যাংকগুলোর অংশীদারত্বে বড় পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি প্রবাসী আয়ের প্রবাহে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আধিপত্য কমছে। গত ১৬ মাসে তাদের অংশীদারত্ব ৫২ শতাংশ থেকে কমে ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কয়েকটি ইসলামী ব্যাংকের দুর্বল আর্থিক অবস্থা ও তারল্য সংকটের কারণে প্রবাসীরা এবং আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো এখন প্রচলিত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী।
পরিসংখ্যান কী বলছে?
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলো দেশের মোট প্রবাসী আয়ের ৫১.৫৭ শতাংশ সংগ্রহ করেছিল, যা ছিল প্রায় ১.০৯ বিলিয়ন ডলার। এই খাতটিতে একসময় তাদের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। তবে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এই প্রবণতায় পরিবর্তন আসতে শুরু করে এবং তা ক্রমেই নিম্নমুখী হয়। ২০২৫ সালের মে মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয় প্রায় ৩১ শতাংশে নেমে আসে।
এর বিপরীতে, প্রচলিত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রচলিত ব্যাংকগুলো যেখানে ১.১৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এনেছিল, সেখানে ২০২৫ সালের মে মাসে তা বেড়ে ২.৩১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই পরিসংখ্যানগুলো স্পষ্ট করে যে, প্রবাসী আয়ের বাজারের নিয়ন্ত্রণ এখন ইসলামী ব্যাংকগুলোর হাত থেকে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর হাতে চলে যাচ্ছে।
পতনের কারণ ও বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সূত্রগুলো এবং বিশেষজ্ঞরা এই পতনের পেছনে বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন। তাদের মতে, সুশাসনের অভাব, কিছু ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং এর ফলে সৃষ্ট তারল্য সংকট প্রবাসী ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি করেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান, “কিছু ইসলামী ব্যাংক এই খাতে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তারা হয় তাদের রেমিট্যান্স কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, অথবা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, কিছু ক্ষেত্রে এই ব্যাংকগুলোর কাছে রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত তারল্যও থাকছে না। আস্থা এবং নির্ভরযোগ্যতার এই অভাবই ইসলামী ব্যাংকগুলোর এই পতনের প্রধান কারণ।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন যে, যদি ইসলামী ব্যাংকগুলো দ্রুত তাদের সেবার মান বৃদ্ধি, ডিজিটাল উদ্ভাবন এবং কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে প্রবাসী আয়ের বাজারে তাদের ভূমিকা আরও সংকুচিত হতে পারে। তাদের মতে, নতুন করে আস্থা তৈরি করতে না পারলে এই সংকট আরও গভীর হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি নেতিবাচক ইঙ্গিত।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- চার জেডের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ আস্থা
- শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মাথাব্যথার ১১ শেয়ার