ঢাকা, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২

পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ প্রস্তাবে সরকারের অনুমোদন

আবু তাহের নয়ন
আবু তাহের নয়ন

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ০৮:৫২:৩০

পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ প্রস্তাবে সরকারের অনুমোদন

আবু তাহের নয়ন: দেশের ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এক বড় পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ৫টি দুর্বল শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনায় সরকার অনুমোদন দিয়েছে, যার জন্য প্রায় ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা বাজেট সহায়তা দেওয়া হবে।

এই ব্যাংকগুলো হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক।

রবিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ সভাপতিত্ব করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

মূলধন সহায়তা ও পরিকল্পনা

একীভূতকরণের জন্য মোট আনুমানিক মূলধন প্রয়োজন ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে শেয়ার ইস্যু করে সংগ্রহ করা হবে, যেসব প্রতিষ্ঠানের আমানত এই ব্যাংকগুলোতে আটকে আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একীভূতকরণ পরিকল্পনার সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তবে এর মধ্যে চারটি ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক—ইতিমধ্যে এই পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু এক্সিম ব্যাংক প্রক্রিয়াটিতে যোগ দেওয়ার আগে তাদের কার্যক্রম স্থিতিশীল করার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে।

সেন্ট্রাল ব্যাংকের নতুন ক্ষমতা

এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে গত ৯ মে জারি করা ব্যাংক রেজোলিউশন অর্ডিন্যান্স, ২০২৫। এই অধ্যাদেশটি বাংলাদেশ ব্যাঙ্ককে দুর্বল ব্যাংকগুলো অধিগ্রহণ, সম্পদ হস্তান্তর, ব্রিজ ব্যাংক তৈরি এবং সেবার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।

এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একবার রেজোলিউশন প্রক্রিয়া শুরু হলে বর্তমান শেয়ারহোল্ডাররা তাদের শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন না। এছাড়া, প্রতিযোগিতামূলক বিডিংয়ের মাধ্যমে দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোর হস্তান্তর মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতাও বাংলাদেশ ব্যাঙ্ককে দেওয়া হয়েছে।

একীভূতকরণের এই জটিল প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহমেদের নেতৃত্বে একটি ছয় সদস্যের উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপটি বাংলাদেশে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের প্রথম বড় প্রচেষ্টা। বারবার ঋণ কেলেঙ্কারি এবং খেলাপি ঋণের বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকিং খাতে যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার করতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত