ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২

গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতি দূর করবেন যেভাবে

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ০৮:৪৯:৫৩

গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতি দূর করবেন যেভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়, বিশেষ করে শেষ ত্রৈমাসিকে। এ সময় আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি বাড়ে, যা মা ও শিশুর জন্য জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে আয়রনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত জরুরি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, গর্ভবতী নারীদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি সুস্থ, গর্ভবতী নন এমন নারীদের তুলনায় বেশি দেখা দেয়। এর ফলে লোহিত রক্তকণিকার (RBC) ঘনত্ব ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়ে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

২০২৪ সালে আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় আয়ারল্যান্ডের ৬০০-এর বেশি প্রথমবারের মায়েদের পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে আয়রনের ঘাটতি ছিল মাত্র ৪.৫%, কিন্তু তৃতীয় ত্রৈমাসিকে তা বেড়ে অর্ধেকেরও বেশি নারীর মধ্যে দেখা দেয়। গবেষকরা জানান, গর্ভাবস্থার শুরুতেই ফেরিটিনের মাত্রা ৬০ μg/L এর ওপরে রাখা গেলে পরবর্তীতে ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এজন্য প্রাথমিক স্ক্রিনিং ও সাপ্লিমেন্টেশনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভ্রূণ ও প্লাসেন্টার জন্য মায়ের রক্তের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শরীরের আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়। খাদ্যে পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে আগেভাগে সমস্যা শনাক্ত করা জরুরি।

আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ, ক্লান্তি, দুর্বলতা, ফ্যাকাশে ত্বক, মাথা ঘোরা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট

গুরুতর অবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি দুটোই কমে যেতে পারে। তাই নিজে অনুমান না করে ল্যাব টেস্ট করানো জরুরি।

গর্ভবতী নারীদের জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

খাদ্য থেকেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করা সবচেয়ে ভালো উপায়। যেমন: লো-ফ্যাট মাংস, মুরগি, মাছ, মসুর ডাল ও শিম, পালং শাক

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার (যেমন কমলা, টমেটো) সঙ্গে খেলে আয়রন শোষণ বাড়ে। তবে চা ও কফি খাবারের কাছাকাছি সময়ে এড়িয়ে চলা উচিত।

সাপ্লিমেন্ট কতটা নিরাপদ?

সাপ্লিমেন্ট আয়রনের ঘাটতি পূরণে কার্যকর হলেও এটি সুষম খাদ্যের বিকল্প নয়। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন কি না তা নির্ধারণ করা উচিত। অতিরিক্ত আয়রন গ্রহণ করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

খাবারের সঙ্গে আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ও হালকা ব্যায়াম কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— নির্ধারিত ডোজ অনুসরণ করা।

এমজে

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত