ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

শিশুর ডিহাইড্রেশন: লক্ষণগুলো জেনে সতর্ক হোন

২০২৫ আগস্ট ৩০ ১৬:৩১:০৬

শিশুর ডিহাইড্রেশন: লক্ষণগুলো জেনে সতর্ক হোন

শিশুরা অফুরন্ত আনন্দের উৎস, তবে তাদের সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত যত্ন অপরিহার্য। বিশেষ করে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে বাবা-মায়েদের সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। শিশুদের কিছু রোগের লক্ষণ বোঝা কঠিন হতে পারে, যার মধ্যে একটি হলো পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)। এই সমস্যাটি গোপনে দেখা দিতে পারে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে তা বিপজ্জনক হতে পারে।

প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের শরীরে পানির পরিমাণ বেশি থাকে এবং তারা দ্রুত পানি হারায়, বিশেষ করে যখন তারা অসুস্থ থাকে বা আবহাওয়া গরম থাকে। তাই বাবা-মায়েদের জন্য ডিহাইড্রেশনের প্রাথমিক লক্ষণগুলো দ্রুত শনাক্ত করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

পানিশূন্যতার সাধারণ কারণশিশুদের ডিহাইড্রেশনের প্রধান কারণগুলো হলো:

ডায়রিয়া: এটি শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল বের করে দেয়।

বমি: ঘন ঘন বমি হলে শরীর থেকে পানি ও ইলেকট্রোলাইট কমে যায়।

জ্বর: শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ঘামের মাধ্যমে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যায়।

কম তরল গ্রহণ: শিশু যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, বুকের দুধ বা ফর্মুলা দুধ না খায়।

যদি এই পরিস্থিতিগুলোতে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এটি ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালান্স বা নিম্ন রক্তচাপের মতো গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে।

ডিহাইড্রেশনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণশিশুর মধ্যে নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে সতর্ক হোন:

শুষ্ক জিহ্বা ও মুখ: জিহ্বা আঠালো হয়ে গেলে বা মুখের লালা কমে গেলে।

প্রস্রাব কমে যাওয়া: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয়টির কম ডায়াপার ভেজা থাকলে অথবা প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ ও তীব্র গন্ধ হলে।

দেবে যাওয়া নরম স্থান (ফন্টানেল): শিশুর মাথার উপরের নরম স্থানটি (ফন্টানেল) অস্বাভাবিকভাবে দেবে গেলে।

অশ্রুহীন কান্না: কান্নার সময় চোখে পানি না এলে।

তন্দ্রাচ্ছন্নতা: শিশু অস্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে থাকলে, সহজে না জাগলে, অথবা খিটখিটে হয়ে থাকলে।

ঠান্ডা, দাগযুক্ত ত্বক: অপর্যাপ্ত রক্ত ​​সঞ্চালনের কারণে ত্বক ঠান্ডা, ফ্যাকাসে বা দাগযুক্ত দেখালে।

পানিশূন্যতা প্রতিরোধের উপায়শিশুকে ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা করতে এই পদক্ষেপগুলো নিন:

নিয়মিত খাওয়ানো: শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফর্মুলা দুধ খাওয়ান।

অতিরিক্ত তরল: গরম আবহাওয়ায় বা অসুস্থ থাকলে শিশুকে অতিরিক্ত তরল দিন।

ডায়াপার পর্যবেক্ষণ: ডায়াপার ভেজার সংখ্যা এবং প্রস্রাবের রঙের ওপর নজর রাখুন।

তাৎক্ষণিক চিকিৎসা: ডায়রিয়া বা বমির মতো অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সহায়তা নিন।

কখন চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করবেন?যদি আপনার শিশুর মধ্যে ডিহাইড্রেশনের কোনো লক্ষণ, বিশেষ করে অশ্রুহীন কান্না, দেবে যাওয়া ফন্টানেল বা তন্দ্রাচ্ছন্নতা দেখা যায়, তবে অবিলম্বে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। দ্রুত চিকিৎসা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত