ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

যৌতুকের ভয়াবহ চিত্র: ৪ বছরে ৩৬ হাজার নারীর মৃ'ত্যু

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ আগস্ট ২৮ ১৪:২৬:২৪
যৌতুকের ভয়াবহ চিত্র: ৪ বছরে ৩৬ হাজার নারীর মৃ'ত্যু

২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে যৌতুক-সংক্রান্ত কারণে প্রায় ৩৬ হাজার নারী প্রাণ হারিয়েছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর এক চাঞ্চল্যকর সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে, যেখানে দেখা যায় মোট ৩৫,৪৯৩ জন নারী যৌতুক-সংক্রান্ত নির্যাতনে নিহত হয়েছেন। এর অর্থ হলো, ভারতে প্রতিদিন গড়ে ২০ জন নারী যৌতুকের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন।

যৌতুক প্রথা আর কেবল দরিদ্র বা মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, উচ্চশিক্ষিত ও কর্মজীবী নারীরাও এই নির্মমতার শিকার হচ্ছেন।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, ভারতে এখনও বিবাহকে একটি অর্থনৈতিক চুক্তি হিসেবে দেখা হয়। কনের পরিবারের কাছে গাড়ি, গয়না, নগদ অর্থ এবং বাড়িসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দাবি করা হয়। এই দাবি পূরণ করতে না পারলে নারীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন, যা অনেক সময় হত্যাকাণ্ডে পর্যবসিত হয়।

একটি বিদেশি গবেষণা অনুযায়ী, ১৯৫০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে ভারতে যৌতুক বাবদ ২৫০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ লেনদেন হয়েছে। এমনকি একবিংশ শতাব্দীতেও প্রায় ৯০ শতাংশ বিয়েতে যৌতুক দেওয়া হয়।

আইনত, ১৯৬১ সাল থেকে ভারতে যৌতুক প্রথা নিষিদ্ধ। এছাড়া, গৃহবধূ নির্যাতন প্রতিরোধে ১৯৮৩ সালে আইনে ৪৯৮(এ) ধারা সংযোজন করা হয়। তবে, আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবতা বদলায়নি। প্রায়শই আদালত যৌতুককে 'উপহার' হিসেবে গণ্য করে, যা অপরাধীদের দায়মুক্তি নিশ্চিত করে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, যৌতুক কেবল অর্থনৈতিক বিষয় নয়, এটি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার ফল। সমাজে যৌতুককে পুরুষদের মর্যাদা ও কর্তৃত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। ফলস্বরূপ, নারীরা যত শিক্ষিত বা কর্মজীবীই হোন না কেন, যৌতুকের চাপ থেকে তারা মুক্তি পান না।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত