ঢাকা, বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২
উচ্চ কোলেস্টেরলের দুশ্চিন্তা? সমাধান আপনার রান্নাঘরেই

আমাদের রক্তনালীতে নীরবে বাসা বাঁধা এক নীরব ঘাতকের নাম উচ্চ কোলেস্টেরল। এটি কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই ধীরে ধীরে শরীরকে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়শই এর উপস্থিতি তখন টের পাওয়া যায়, যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রায় বাইরে চলে যায়। তবে আশার কথা হলো, ওষুধের উপর নির্ভর না করে, কেবল জীবনযাত্রায় কিছু পরিকল্পিত পরিবর্তন এনেই এই শত্রুকে পরাজিত করা সম্ভব।
এর বিরুদ্ধে আপনার প্রধান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হতে পারে আপনার খাবারের প্লেট। খাদ্যতালিকায় দ্রবণীয় আঁশ বা সলিউবল ফাইবার যোগ করা এর অন্যতম সেরা উপায়। ওটস, ডাল, মটরশুঁটি, চিয়া সিড বা তিসির মতো খাবারগুলোতে থাকা এই আঁশ হজম প্রক্রিয়ার সময় এক ধরনের জেল তৈরি করে, যা খারাপ কোলেস্টেরলকে (LDL) রক্তে শোষিত হতে বাধা দেয় এবং শরীর থেকে বের করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মাত্র ৫ থেকে ১০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ গ্রহণ করলে তা কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
খাদ্যতালিকায় আঁশ বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার প্লেটকে উদ্ভিজ্জ খাবারে রঙিন করে তোলাও জরুরি। ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম ও বিভিন্ন বীজে রয়েছে "প্ল্যান্ট স্টেরল" নামক প্রাকৃতিক উপাদান, যা অন্ত্রে কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দিয়ে এক অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করে। খাবারের প্লেটে কী যোগ করছেন তার পাশাপাশি কী বাদ দিচ্ছেন, সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত চিনি ও পরিশোধিত শর্করা, যেমন সাদা আটার রুটি বা কোমল পানীয়, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড নামক আরেক ধরনের ক্ষতিকর চর্বির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
চর্বি বা ফ্যাট মানেই শত্রু নয়, আপনাকে শুধু সঠিক চর্বি বেছে নিতে জানতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড ও ভাজাপোড়াতে থাকা ট্রান্স ফ্যাটকে পুরোপুরি বিদায় জানান, কারণ এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং উপকারী কোলেস্টেরল (HDL) কমিয়ে দেয়। এর বিপরীতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটকে বন্ধু বানান। অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো, আখরোট এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ আপনার হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি শরীরকে সচল রাখাও সমান জরুরি। এর জন্য আপনাকে ম্যারাথন দৌড়াতে হবে না। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন, মাত্র ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটার অভ্যাসই আপনার শরীরে জাদুর মতো কাজ করতে পারে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম রক্ত থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলকে লিভারে পাঠাতে সাহায্য করে, যেখান থেকে তা প্রক্রিয়াজাত হয়ে শরীর থেকে নিষ্কাশিত হয়।
মনে রাখা জরুরি যে, এটি রাতারাতি কোনো সমাধান নয়, বরং জীবনযাপনের একটি সামগ্রিক পরিবর্তন। ধৈর্য ও অধ্যাবসায়ের সাথে এই স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো রপ্ত করতে পারলে আপনি প্রাকৃতিকভাবেই কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আপনার স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রণ আপনারই হাতে, কোনো ওষুধের বোতলে নয়।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ
- তিন শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, ডিএসইর সতর্কবার্তা