ঢাকা, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর কখনই রাজনৈতিক ঘাঁটি হবে না: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর কখনই রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘাঁটি হবে না, এমনকি কোনো শিক্ষার্থী আর টর্চার সেলে নির্যাতিত হবে না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ শিক্ষার্থীদের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আমাদের বাবা-মা ও শিক্ষকরা। আমরা সেই উত্তরসূরি রাষ্ট্র হিসেবে এবার তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানকে বহু কষ্টে বড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়। কিন্তু লেখাপড়া শেষ করে অনেক ছাত্র অসুস্থ হয়ে বের হয় হলের নোংরা পরিবেশ, নিম্নমানের খাবার, আর দলীয় সন্ত্রাসীদের পীড়নের কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের জোর করে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া হতো। প্রশাসন ও শিক্ষকরা জেনেও, থামানোর চেষ্টা করেননি। কারণ, শিক্ষকদের বড় একটি অংশ দলীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে প্রমোশন ও সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছিলেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল গুলোতে দলীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে চলত। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছিল টর্চার সেল। এসব বন্ধে আমাদের সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা আর কখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন রাজনীতির দ্বারা কলুষিত হতে দেব না, যা পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করে, তরুণদের জীবন ধ্বংস করে। বাবা-মায়েদের যেন সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠিয়ে আর কখনো শঙ্কায় থাকতে না হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন দেশের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ধারাবাহিক সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। তিনি জানান, শুরু থেকেই পরামর্শক কমিটির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্কুলগুলোতে শিক্ষার মান বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে, যা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি শূন্যপদে ছয় হাজার পাঁচশ’র বেশি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি জানান, দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বছরের মধ্যেই পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত ১০০টি বিদ্যালয়ে ই-লার্নিং কার্যক্রম চালু হবে, যেখানে ঢাকার অভিজ্ঞ শিক্ষকরা প্রযুক্তির সহায়তায় ক্লাস নেবেন। এতে শিক্ষক সংকট অনেকটাই কমে আসবে।
ড. ইউনূস বলেন, যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সীমিত, সেখানে সোলার প্যানেল বসানো হচ্ছে। একই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও স্টারলিংক ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে এই সংকট মোকাবিলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, নারীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করতে স্কুল নির্মাণ কমিটিতে নারী স্থপতি রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্কুল ভবনের নকশা, শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ ও পাঠদানের পদ্ধতিতে মেয়েদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সবশেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা শুধু বই মুখস্থ করার বিষয় নয় এটা একটি জীবনমুখী প্রক্রিয়া। একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয় তার শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে। আমরা এমন ভবিষ্যৎ গড়তে চাই, যেখানে কোনো সন্তান টর্চার সেলে নির্যাতিত হবে না, কোনো শিক্ষক দলীয় দাসত্বে আবদ্ধ থাকবে না, কোনো মা-বাবা সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে শঙ্কিত থাকবেন না।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- নতুন মার্জিন নীতিতে কারা সুবিধা পাবেন, কারা হারাবেন?
- বাংলাদেশ বনাম ভারত: খেলাটি কবে, কোথায়, কখন-জানুন সময়সূচি
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: কবে, কখন, কোথায়-যেভবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- শেয়ারবাজারই হতে পারে ওষুধ শিল্পের নতুন প্রাণশক্তি: ডিএসই চেয়ারম্যান
- শেয়ারবাজারে নতুন মার্জিন বিধিমালা জারি করল বিএসইসি
- নিউজিল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি দেখুন(LIVE)
- আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঝড়ো শুরু, সরাসরি দেখুন এখানে(LIVE)
- ‘নো ডিভিডেন্ড’- এর বদনাম ঘুচাল বস্ত্র খাতের তিন কোম্পানি
- শিক্ষাবৃত্তি: প্রতি মাসে পাবে ৩ হাজার টাকা, আবেদন করবেন যেভাবে
- পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্তা
- পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার শূন্য ঘোষণা নিয়ে যা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা
- পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা কী পাবেন? জানালেন গভর্নর
- সাপোর্টের রেকর্ড মুনাফা, ১৫ বছরে সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড
- দুই বছর ডিভিডেন্ড না দেওয়ায় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবনমন
- চলতি সপ্তাহে আসছে ৯ কোম্পানির ডিভিডেন্ড