ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২
নগদ টানাটানিতে হিমশিমে ব্যাংক
.jpg) 
                                    বর্তমানে ভয়াবহ তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়েও সংকট কাটাতে পারছে না এসব ব্যাংকগুলো। ফলে রাজধানীসহ সারাদেশের ব্যাংক শাখাগুলোতে নিজেদের আমানত উত্তোলনে করতে গিয়ে গ্রাহকরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টাকা মিলছে না, আবার কোথাও কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা ও নানা অজুহাতে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন শাখায় গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে, খুবই প্রয়োজনেও অনেকেই টাকা তুলতে পারছেন না। চিকিৎসা, সন্তানের স্কুল ফি, ঘর ভাড়া কিংবা ব্যবসার খরচ—সব ক্ষেত্রেই পড়ছেন গ্রাহকরা চরম বিপাকে। এতে ক্ষোভ আর হতাশায় বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন গ্রাহকরা। কেউ কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন, আবার কেউ কেউ প্রতিবাদ করছেন ব্যাংক চত্বরে।
মতিঝিল শাখার বেসরকারী একটি ব্যাংকের একজন গ্রাহক জানান “২০০১ সাল থেকে এই ব্যাংকের গ্রাহক আমি। আগে কখনো এমন হয়নি। এখন ৩০ হাজার টাকার চেক নিয়ে গেলে ৫/১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলছে, পরে আসেন।”
ন্যাশনাল ব্যাংকের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা জানান, “পেনশনের টাকাই তুলতে পারছি না। সকাল ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকেও কিছু পেলাম না। কখনো বলে সার্ভার ডাউন, কখনো ক্যাশ নেই। নানা অজুহাত”
অর্থনীতিবীদরা মনে করেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকেই কয়েকটি ব্যাংকে আমানত তুলে নেওয়ার হিড়িক পড়ে। এতে করে ব্যাংকগুলো নগদ অর্থ সংকটে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হলেও তারল্য সংকট কাটেনি। মূল সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বিতর্কিত ব্যবসায়ীদের হাতে ব্যাংকগুলোর মালিকানা থাকায়।
এছাড়াও তীব্র সংকটে পড়েছে যেই সকল ব্যাংক তাদের মধ্যে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক,ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক,আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক,ইউনিয়ন ব্যাংক,এক্সিম ব্যাংক,পদ্মা ব্যাংক,ন্যাশনাল ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)
এসব ব্যাংকের অনেক গ্রাহকই জানাচ্ছেন, তদবির ছাড়া টাকা পাওয়া অসম্ভব। একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমার একাধিক কর্মচারী আছে। ৫০ হাজার টাকা তুলতে গিয়েছিলাম, পেয়েছি মাত্র পাঁচ হাজার। ব্যবসা নিয়ে এখন টানাটানি।”
রাজধানীর বাইরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ব্যাংকগুলোতেও একই সংকট। ন্যাশনাল ব্যাংকের বান্দুরা শাখায় ১৫ লাখ টাকা জমা রাখা গ্রাহক সুফিয়া বেগম অভিযোগ করেন, “আমার টাকায় আমি হাতও দিতে পারছি না। বারবার ৫/১০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। এভাবে আর কতদিন চলবে?”
একইভাবে আনোয়ারা বেগমের ৮ লাখ টাকাও আটকে আছে। একজন গ্রাহক জানান, “১২ লাখ টাকা ছিল। বিভিন্ন যোগাযোগ করে লাখ খানেক টাকা তুলেছি, তাও ১০-২০ হাজার করে।”
তবে এই সংকটের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করছে, আমানতকারীদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের এই দাবি করার পরও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তার ভিন্ন চিত্র। অনেক গ্রাহক বলছেন, ব্যাংকে টাকা রেখেও সেটি কাজে লাগাতে না পারলে সেই নিরাপত্তা অর্থহীন।
একটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সমস্যার সমাধানে কাজ করছি।” অন্যদিকে, আরেক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, “গ্রাহকদের সামলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আশা করছি পরিস্থিতি দ্রুত ঠিক হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে ,ব্যাংকে রাখা নিজের টাকাই যখন তোলা যাচ্ছে না, তখন সাধারণ মানুষ আস্থা হারাচ্ছেন ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর থেকে। সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে এই আস্থাহীনতা বড় ধরনের আর্থিক অস্থিরতায় রূপ নিতে পারে। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে চাই দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- ডিএসই’র দুই ব্রোকারেজের ট্রেডিং লাইসেন্স বাতিল
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টি-টোয়েন্টি: যেভাবে দেখবেন লাইভ (LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু ফেব্রিক্স
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১৯ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ: কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টি-২০: কবে, কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন খেলাটি
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া:কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি ফ্রিতে দেখুন(LIVE)
- মার্জিন রুল থেকে মিউচুয়াল ফান্ড—সবখানেই আসছে বড় পরিবর্তন
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে অগ্নী সিস্টেমস
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি ফ্রিতে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে সিমটেক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে তালিকাভুক্ত২৪ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে জেএমআই হসপিটাল
 
                         
                    -300x200.jpg) 
             
             
            -300x200.jpg) 
             
             
             
            -300x200.jpg) 
             
            -100x66.jpg) 
                    -100x66.jpg) 
                    