ঢাকা, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

মেরিন ড্রাইভে তীব্র ভাঙন: ঝুঁকিতে যান চলাচল ও উপকূলবাসী

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ২৮ ০৯:৪৯:৩১
মেরিন ড্রাইভে তীব্র ভাঙন: ঝুঁকিতে যান চলাচল ও উপকূলবাসী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের তীব্র আঘাতে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়কের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর থেকে সাবরাং ইউনিয়নের খুরেরমুখ জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কের অন্তত দশটি স্থানে এই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে দৃষ্টিনন্দন এই সড়কটি দিয়ে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এবং হাজারো ঘরবাড়ি, স্থাপনা ও ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ভাঙনের কারণ ও বর্তমান পরিস্থিতি

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর সঙ্গে অমাবস্যার প্রভাব যুক্ত হওয়ায় সাগর অত্যন্ত উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ছে। এই জোয়ারের পানির তোড়ে টেকনাফের বিভিন্ন অংশে মেরিন ড্রাইভের একাধিক অংশ ভেঙে গেছে। আগ্রাসী ঢেউয়ের আঘাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড এবং ফতেয়াআলী পাড়া থেকে বিজিবি ক্যাম্প এলাকা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে ভাঙন বিশেষভাবে তীব্র হয়েছে। এর আগে একই স্থানে ভাঙন দেখা দিলেও এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। জোয়ারের পানি সড়ক পেরিয়ে পূর্ব পাশের ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ায় কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ ও স্থানীয়দের অভিযোগ

ভাঙন কবলিত মেরিন ড্রাইভ সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে। তারা জিও ব্যাগ, ইট ও বালু ফেলে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ রক্ষার চেষ্টা করছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানিয়েছেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে সেনাবাহিনী কাজ করছে।

তবে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে মেরিন ড্রাইভে ভাঙন দেখা দিলেও শুধুমাত্র অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, কোনো স্থায়ী সমাধান করা হয় না।

টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ড্রেজার দিয়ে সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলন করার কারণেই ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। যেসব এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে, সেখানেই ভাঙন সবচেয়ে বেশি। এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে এই ভাঙন আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ইতিহাস

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ইতিহাস

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। রোববার (২৭ জুলাই) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিবেদনে বলা... বিস্তারিত