ঢাকা, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

রিটার্নিং ও প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত সিইসির

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ১৪ ১১:৪৩:২৭
রিটার্নিং ও প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত সিইসির

ভোটে অনিয়ম রোধে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়োগে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এবার প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়োগে নতুন কৌশল নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু জায়গায় জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে।

সিইসি জানান, যেসব প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার বিগত নির্বাচনগুলোতে অনিয়মে জড়িত ছিলেন তাদের চিহ্নিত করে পরবর্তী নির্বাচনে দায়িত্ব না দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি বিগত নির্বাচনে রিগিংয়ে সহায়তাকারীদের তালিকা থেকে বাদ দিতে। সেই জায়গায় বিকল্প হিসেবে ব্যাংক কর্মকর্তা বা অন্যান্য নিরপেক্ষ পেশাজীবীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কারণ তারা সরাসরি সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং আগে রিগিংয়ের অংশ ছিলেন না।”

রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেও যোগ্যদের বাছাই করে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে সবার জন্য নয়, যাদের দক্ষতা প্রমাণিত শুধু তাদেরকেই রিটার্নিং অফিসার হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হবে।”

এছাড়া সিইসি প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথমবারের মতো ভোটের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথাও জানান। তিনি বলেন, “চারটি বিকল্প পদ্ধতি বিশ্লেষণ করে পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে প্রবাসীদের আগে থেকেই অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। যারা নিবন্ধিত হবেন তারাই কেবল এই প্রক্রার আওতায় ভোট দিতে পারবেন।”

ভোটারদের কাছে ব্যালট পাঠানো এবং ফেরত আনার পুরো প্রক্রিয়াটি জটিল ও ব্যয়বহুল জানিয়ে তিনি বলেন, “ডিএইচএল ও ফেডেক্সের মাধ্যমে পাঠাতে গেলে প্রতিটি ভোটের পেছনে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। তবে সরকারি ডাক বিভাগের মাধ্যমে এ খরচ প্রায় ৭০০ টাকা হবে। তাদের সঙ্গে বিশেষ ব্যবস্থায় কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

ব্যবহারিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে সিইসি বলেন, “প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত সময় থাকে মাত্র ১২ দিন। এই সময়ের মধ্যেই ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনার কাজ শেষ করতে হয় যা বেশ চাপের। এতে প্রায় ২৪ শতাংশ ‘সিস্টেম লস’ হয়, আমাদের দেশে সেটা আরও বেশি হতে পারে। তবু আমরা চেষ্টা করছি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী ভোটারকে যুক্ত করতে।”

সবমিলিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থায় নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নীতিগত ও কারিগরি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন
ট্যাগ: সিইসি

সর্বোচ্চ পঠিত