ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুলাই ০৮ ২০:৪৮:১৫
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে স্পেনের জাতীয় আদালত।

এই তদন্তের কেন্দ্রে রয়েছে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা একটি মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা।

তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর বরাতে জানা গেছে, ২ জুলাই থেকে এ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্পেনের সংসদ সদস্য জাউমে অ্যাসেনস। এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে তিনি জানান, এই তদন্ত ১ জুনের ঘটনার ভিত্তিতে শুরু হয়েছে, যেখানে ম্যাডলিন নামের একটি ত্রাণবাহী জাহাজ আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের শিকার হয়।

জাহাজটিতে ১২ জন আন্তর্জাতিক কর্মী ও বিপুল পরিমাণ মানবিক সহায়তা সামগ্রী ছিল। ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি আটক করে। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থানবার্গ এবং ফরাসি-ফিলিস্তিনি মানবাধিকার আইনজীবী রিমা হাসান।

স্প্যানিশ নাগরিক সার্জিও টোরিবিও ও আরব কজ-এর প্রতি সংহতি কমিটি নামের একটি সংগঠন এই মামলাটি করেছে। তারা স্পেনের সর্বজনীন বিচারব্যবস্থার নীতির আওতায় এটি দায়ের করেছে, যার ফলে বিশ্বের যেকোনো স্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ স্পেনে বিচারযোগ্য হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ড্রোন ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের অবৈধভাবে আটক করেছে, যা গাজায় চলমান সংঘাতের অংশ হিসেবে বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক উদাহরণ।

গাজায় চলমান সহিংসতার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে স্পেনের আদালত। মামলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)–এর সহযোগিতারও আহ্বান জানানো হয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়, এই হামলাকে গাজায় চলমান গণহত্যার প্রেক্ষাপটেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

এই প্রথমবার স্পেন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলি শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নিল।

স্প্যানিশ সংসদ সদস্য জাউমে অ্যাসেনস এক বিবৃতিতে বলেন, এটি দায়মুক্তির সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যখন কোনো রাষ্ট্র নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তখন নাগরিক সমাজের কর্তব্য হয় ন্যায়বিচারকে নৈতিক, আইনি ও রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা।

বিশ্লেষকদের মতে, এই তদন্ত অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ইউরোপে যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি ভবিষ্যতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হতে পারে।

তবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত দখলদার ইসরায়েল সরকার কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত