ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ইতিহাসে জায়গা নিচ্ছে শেখ হাসিনার পলায়নের ঐতিহাসিক মুহূর্ত

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ০৩ ০৮:১৭:০০
ইতিহাসে জায়গা নিচ্ছে শেখ হাসিনার পলায়নের ঐতিহাসিক মুহূর্ত

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের স্মরণে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে' রূপান্তরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে জাদুঘরের জন্য বিভিন্ন স্মারক সংগ্রহের কাজ চলছে, এবং আগামী ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাদুঘরটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে আন্দোলনের স্থিরচিত্র, স্মারক, শহীদদের জামাকাপড়, চিঠি, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, পত্রিকার কাটিং, অডিও-ভিডিওসহ বিভিন্ন স্মৃতি স্মারক থাকবে। এছাড়া, শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও বিশেষ স্থান পাচ্ছে।

জাদুঘরটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অংশ হিসেবে পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সরাসরি এই বিষয়টি দেখভাল করছে এবং উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে।

জাদুঘরের জন্য স্মারক সংগ্রহ করতে একটি আর্কাইভ ও কালেকশন টিম দেশজুড়ে কাজ করছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিজ্ঞাপন সম্প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে স্মারক পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে। গণভবন, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, সেটিকেই জুলাই স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে। গত বছরের ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর 'জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯' বাতিল হলে শেখ হাসিনার পরিবার গণভবনে থাকার আইনি অধিকার হারায়।

এরপর ছাত্র প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনকে জুলাই জাদুঘর করার প্রস্তাব করেন এবং গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পঞ্চম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২ নভেম্বর তৎকালীন উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম জাদুঘর রূপান্তরের জন্য কমিটি ঘোষণার কথা জানান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গণভবনের সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশ সংস্কার করা হয়েছে, তবে ৫ আগস্টের ভাঙচুরের স্মৃতি সংরক্ষণে কিছু অংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। নতুন স্থাপত্য নকশায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৭০ শতাংশ পূর্তকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।

দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর গণভবন সাধারণ মানুষের অবাধ বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। তবে ৮ আগস্ট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গণভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

গণপূর্ত অধিদপ্তরসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৫৩ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত গণভবন ক্যাম্পাসে একটি দুই তলা ভবন এবং কর্মচারীদের জন্য একতলার পাকা ও সেমিপাকা স্ট্রাকচার ছিল। গত ১ জানুয়ারি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গণভবনের বরাদ্দ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেয়। এই জাদুঘরটি ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীতে এক টুকরো সবুজ এবং লন, পুকুর, খেতসহ নানা ধরনের ফলের বাগান রয়েছে, যা নগরবাসীর সুস্থ বিনোদনেরও একটি কেন্দ্র হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত