ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

আইএমএফ ঋণ অনুমোদন: বাংলাদেশ একসঙ্গে পাচ্ছে ১৩০ কোটি ডলার

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ জুন ২৪ ০৭:১৭:৩৭
আইএমএফ ঋণ অনুমোদন: বাংলাদেশ একসঙ্গে পাচ্ছে ১৩০ কোটি ডলার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। সোমবার (২৩ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ পাবে।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদী ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল। এই ঋণ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করা।

তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় আইএমএফের কাছে এই ঋণ চেয়েছিল।

আইএমএফের এই ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ হলো আইএমএফের একটি নতুন তহবিল। যেটি থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পেয়েছিল। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। সব মিলিয়ে তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।

ঋণের বাকি ছিল ২৩৯ কোটি ডলার। এবারের ১৩০ কোটি ডলার পাওয়া গেলে অবশিষ্ট থাকবে ১০৯ কোটি ডলার। তবে এই কর্মসূচির সঙ্গে নতুন করে আরও প্রায় ৭৬ কোটি ডলার যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে, বিশেষত টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এরপর এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে গিয়েছিল।

সবশেষ গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফের মধ্যে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব আলোচনার পর ১২ মে উভয় পক্ষ একটি চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায়, যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করে তোলে। পরে, ১৪ মে আইএমএফ জানায়—দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং এটি তাদের নির্বাহী পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে জুন মাসেই ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত