ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
ইরান-ই'সরায়েল যু'দ্ধে কোন দেশকে এগিয়ে রাখছে বিশেষজ্ঞরা?
.jpg)
ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর পাল্টা হামলা চালায় তেহরানও। এখনও পর্যন্ত হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস না করা পর্যন্ত থামবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এদিকে ইরানও প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে। এমতাবস্থায় যুদ্ধে কে জয়ী হতে পারে সেটা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
কাতারের ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মুহানাদ সেলুম বলেছেন, "এই যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব থাকলেও, ইরানের দীর্ঘ সময় যুদ্ধের ময়দানে টিকে থাকার সামর্থ্য রয়েছে।"
তিনি ব্যাখ্যা করেন, 'সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ইরানের আকাশসীমায় প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তবে, ইরানি ভূখণ্ডের আয়তন ইসরায়েলের ৭০ গুণ।'
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে সেলুম বলেন, "(ইরানিরা) অনেক আঘাত সহ্য করতে পারে, কিন্তু তাদের নিজস্ব ধরনের অস্ত্রশস্ত্রও আছে যা ইসরায়েলকে সত্যিই আঘাত করতে পারে। ইসরায়েলের এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার সক্ষমতা নেই, তাই তাদের একটি নিষ্পত্তিমূলক বিজয় দরকার অথবা যত দ্রুত সম্ভব তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।"
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, "আমরা এই সংঘাতের একটি জটিল পর্যায়ে রয়েছি...কারণ উভয় পক্ষ এখনো এটিকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করেনি, কিন্তু উভয় পক্ষই তাদের অস্ত্রের গতি বাড়াচ্ছে।"
সেলুমের মতে, "হামাসের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় এটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘বিপর্যস্ত’ হতে পারে—এই কৌশলটি এখন ইরানিরা ব্যবহার করছে।"
তিনি উল্লেখ করেন, "ইরান একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, যা ইসরায়েলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইসরায়েলের আয়রন ডোম-সহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অধিকাংশ হামলা প্রতিহত করলেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতি ঘটাচ্ছে।"
অধ্যাপক সেলুমের মতে, "যদি (যুদ্ধ) দীর্ঘায়িত হয়, তবে তা ইসরায়েলের স্বার্থের অনুকূল হবে না। ইসরায়েল এই যুদ্ধে বেশি দিন টিকতে পারবে না। কারণ অধিকাংশ ইসরায়েলি বাংকারে (ভূগর্ভস্থ আশ্রয় কেন্দ্র) রয়েছে, তাদের অর্থনীতি প্রভাবিত হচ্ছে।"
গাজায় চলমান সংঘাতের কারণে ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের অর্থনীতি চাপের মুখে রয়েছে। ইরানের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হলে এই চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রতিরক্ষা ব্যয়ের বাড়তি বোঝা, জনশক্তির ঘাটতি এবং পর্যটন খাতের পতন ইসরায়েলের অর্থনীতিকে দুর্বল করছে।
অন্যদিকে, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর থেকে ইরান অন্তত গত ৪০ বছর ধরে ‘জরুরি পরিস্থিতি’ ভোগ করছে। লেবানন ও সিরিয়ায় তাদের সক্রিয় মিলিশিয়া বাহিনী রয়েছে এবং কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও তারা টিকে আছে। ইরানের অর্থনীতি ইসরায়েলের তুলনায় ভিন্ন প্রকৃতির হলেও বিশেষ করে জ্বালানি তেল রপ্তানি ও আঞ্চলিক প্রভাবের কারণে নিষেধাজ্ঞার সত্ত্বেও ইরান কিছুটা স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
অধ্যাপক সেলুম বলেন, "সুতরাং আমরা এমন দুটি দেশকে দেখছি যারা একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।"
এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সৃষ্টি করেছে, যেখানে উভয় পক্ষই একে অপরের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে জয়লাভের চেষ্টা চালাচ্ছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার
- খোঁজ মিলছে না আয়াতুল্লাহ খামেনির!
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকার খেলাপি গ্রাহক গ্রেপ্তার
- ঢাবির হলে প্রকাশ্যে ধূমপানে ২০০ টাকা জরিমানার ঘোষণা
- প্রাতিষ্ঠানিকদের দখলে ৮ কোম্পানি: ৪০ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ
- ১০ শতাংশ শেয়ারও নেই ৮ কোম্পানির উদ্যেক্তা-পরিচালকদের
- আট কোম্পানির উদ্যোক্তাদের নিয়ন্ত্রণে ৮০ শতাংশের বেশি শেয়ার
- সরকারি চাকরিতে আসছে অবসরের নতুন নিয়ম
- পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকা সত্বেও ফেসভ্যালুর নিচে ১৬ ব্যাংকের শেয়ার
- এক কোম্পানির যাদুতেই শেয়ারবাজারে উত্থান!
- ‘র’-এর ৬ এজেন্ট গ্রেপ্তার
- রেকর্ড দামে তিন প্রতিষ্ঠান: বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে তিন কোম্পানি
- রেকর্ড তলানিতে তিন কোম্পানির শেয়ার: বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ
- ঢাবিতে বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত টিএসসি এলাকা