ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান নিয়ে যা বলে গেছেন মহানবী (সা)

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুন ২০ ১১:৪৬:৫০
ইরান নিয়ে যা বলে গেছেন মহানবী (সা)

মধ্যপ্রাচ্যে দিন দিন উত্তেজনার পারদ চড়ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাত নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত যদি পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধে রূপ নেয় তবে তা বিশ্বকে ঠেলে দিতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দোরগোড়ায়।

তবে অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ মনে করেন, এমন একটি যুদ্ধের পূর্বাভাস বহু আগেই দিয়েছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। সহীহ হাদিসসমূহে উল্লেখ রয়েছে—খোরাসান অঞ্চল থেকে একটি সেনাবাহিনী কালো পতাকা হাতে আগমন করবে যাদের অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না যতক্ষণ না তারা বায়তুল মুকাদ্দাসে সেই পতাকা স্থাপন করে।

ইসলামী পণ্ডিতদের ব্যাখ্যায় খোরাসান বলতে বর্তমান ইরান, আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশ বোঝানো হয়। এই অঞ্চলের বৃহৎ অংশ আজকের ইরানের অন্তর্ভুক্ত। সে বিবেচনায় অনেকেই মনে করছেন, ইরান থেকেই সেই কালো পতাকাধারী বাহিনীর সূচনা হতে পারে যারা আল-আকসা মসজিদ তথা বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে আসবে।

ইসরায়েল ১৯৮০ সালে 'জেরুজালেম আইন' পাস করে জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করলেও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে এখনও ফিলিস্তিনের অধিকৃত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করে। বর্তমানে শহরটি পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। এই অবস্থায় অনেকেই হাদিসে বর্ণিত সেই ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবায়ন যেন দেখতে পাচ্ছেন সময়ের আয়নায়।

মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, "যখন তোমরা খোরাসান থেকে কালো পতাকা এগিয়ে আসতে দেখবে তখন তাদের সঙ্গে যোগ দাও। কারণ তাদের মধ্যেই থাকবেন আল্লাহর খলিফা—ইমাম মাহদী।" বহু ইসলামি ইতিহাসবিদ ও আলেমের মতে, ইমাম মাহদীর নেতৃত্বেই এই বাহিনী বায়তুল মুকাদ্দাস অভিমুখে অগ্রসর হবেন এবং এই যুদ্ধ হবে কেয়ামতের বড় আলামতসমূহের একটি।

হাদিসে ‘আল-মালহামা’ নামে এক ভয়াবহ যুদ্ধের কথাও বলা হয়েছে যা হবে মানব ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এই যুদ্ধেই ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে ইসলামি খেলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটবে বলে মনে করেন বহু ইসলামি গবেষক।

সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্ভাবনার বাস্তব রূপ যেন ফুটে উঠছে। ১৩ জুন ইসরায়েল “অপারেশন রাইজিং লায়ন” নামে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী, সাংবাদিক ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। পাল্টা জবাবে ইরানও হামলা চালায়। এখন দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে অনেকেই প্রশ্ন করছেন—তবে কি আমরা কেয়ামতের শেষ অধ্যায়ের কাছাকাছি চলে এসেছি? উত্তর একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। তবে সময়ের ঘটনাপ্রবাহ অনেক কিছু ভাবতে বাধ্য করছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত