ঢাকা, রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
নাগরিকত্ব নিয়ে ইতালিতে গণভোট, প্রবাসীদের জন্য দুঃসংবাদ

ইতালিতে নাগরিকত্ব প্রদান ও বিদেশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে আয়োজিত গণভোটে ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় উদ্যোগটি কার্যত ভেস্তে গেছে। স্বল্প ভোটার অংশগ্রহণের ফলে এই গণভোট ব্যর্থ হয়েছে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির কড়া অভিবাসননীতির জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইউরোপের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইতালিতে এই গণভোট আয়োজন করেছিল বাম ও মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন এবং একটি বড় শ্রমিক ইউনিয়ন। তারা সরকারের কড়াকড়ি নীতির বিরোধিতা করে অভিবাসন ব্যবস্থায় শিথিলতা আনার দাবি জানায়। ভোটগ্রহণ চলে রোববার থেকে সোমবার পর্যন্ত। কিন্তু জনসাধারণের নিরুৎসাহিত অংশগ্রহণ উদ্যোগটিকে ব্যর্থ করে দেয়।
গণনা শেষে দেখা গেছে, ইতালির ৫ কোটি ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ ভোটার গণভোটে অংশ নিয়েছেন। দেশটির আইন অনুযায়ী কোনো গণভোট সফল করতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোটারের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
আয়োজকরা শুরু থেকেই আশঙ্কা করছিলেন, ভোটারদের আগ্রহের অভাবে এই গণভোট ব্যর্থ হতে পারে। জনমত জরিপেও সেই পূর্বাভাস মিলেছিল। আর শেষ পর্যন্ত সেটিই বাস্তব হলো।
ফলাফলকে প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। রোববার ভোটার উপস্থিতি যখন মাত্র ২২ শতাংশে পৌঁছায় তখন রোমের একটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন মেলোনি। সেখানে তিনি আবারও স্পষ্টভাবে জানান, এই গণভোটে তিনি ভোট দেবেন না। এর আগে তিনি তার সমর্থকদেরও ভোটদানে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
গণভোট কেন হয়েছিল?ইতালিতে জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতিও দুর্বল হয়ে পড়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এ অবস্থায় ইতালিকে সচল রাখতে হলে আরও বেশি বিদেশি নাগরিককে আকৃষ্ট করতে হবে। তাদের মধ্যে এমন আস্থা গড়ে তুলতে হবে। যাতে তারা ইতালিকে কাজ ও বসবাসের জন্য নিরাপদ ও সুযোগ-সমৃদ্ধ মনে করেন।
এই বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির সরকারের অভিবাসন ও শ্রমনীতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গণভোটের আয়োজন করা হয়। এতে মোট পাঁচটি বিষয়ে জনগণের মতামত চাওয়া হয়। যার মধ্যে চারটি সরাসরি কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে যুক্ত।
এই চারটি ইস্যু ছিল:১. চাকরিচ্যুতির ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অধিক সুরক্ষা২. ন্যায্য বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির দাবি৩. বেকারত্ব ভাতার অধিকার নিশ্চিত করা৪. কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া
গণভোটের মাধ্যমে নাগরিকদের এই সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে মত জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
গণভোটের পঞ্চম প্রশ্নটি ছিল ইতালির নাগরিকত্ব অর্জনের শর্ত শিথিল করা নিয়ে। প্রস্তাব দেওয়া হয়, দেশটিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবশ্যিক বসবাসের সময়সীমা ১০ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছরে আনার। আয়োজকদের মতে, বর্তমান ১০ বছরের শর্তের কারণে অন্তত ২৫ লাখ বিদেশি নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জনমত জরিপ প্রতিষ্ঠান ইউট্রেন্ডের তথ্যমতে, ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে ইতালির উত্তরাঞ্চলের শিল্পসমৃদ্ধ এলাকায় অংশগ্রহণ ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছাড়া যেসব শহরে বামপন্থি দলগুলোর শক্ত অবস্থান রয়েছে, সেখানেও ভোটার উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে দেশের দক্ষিণের কৃষিপ্রধান অঞ্চলে ভোটার অংশগ্রহণ ছিল অপেক্ষাকৃত কম।
মন্ত্রিপরিষদের আন্ডারসেক্রেটারি এবং মেলোনির মিত্র জোভানবাতিস্তা ফাৎসোলারি বলেছেন, “প্রতিক্রিয়া খুবই স্পষ্ট। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো সরকার বেশ শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে এবং বিরোধী দল দুর্বল হয়েছে, জনসমর্থন হারিয়েছে।”
গণভোট ব্যর্থ হওয়া প্রসঙ্গে জরিপ সংস্থা ইউট্রেন্ড-এর লরেঞ্জো প্রেগলিয়াস্কো বলেন, “ভোটার উপস্থিতি ৩০ শতাংশের ওপরে হোক বা তার ঠিক নীচে, তারপরও এটি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম... আয়োজকদের প্রত্যাশা এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অনেক কম।”
ইনফোমাইগ্রেন্টস
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- এক বহুজাতিকের ধাক্কায়ই কেঁপে উঠল শেয়ারবাজার
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১৪ কোম্পানি
- ইপিএস প্রকাশ করার তারিখ জানাল ১৫ প্রতিষ্ঠান
- ডিএনসিসির শিক্ষাবৃত্তি পাবে ২ হাজার শিক্ষার্থী
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- শেয়ারবাজারে বড়দের দাপট, ছোটদের পিছুটান
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৪ প্রতিষ্ঠান
- ২৭ জুলাই : শেয়ারবাজারের সেরা ১১ খবর
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১২ কোম্পানি
- বিকালে আসছে ১০ কোম্পানির ইপিএস