ঢাকা, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দ্যুতি ছড়াচ্ছে ১৩ ‘বনেদি’ কোম্পানি

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিনের মন্দা পরিস্থিতি সত্ত্বেও কিছু 'বনেদি' কোম্পানি তাদের শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তি এবং বিনিয়োগকারী-বান্ধব নীতির কারণে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৪১২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শতাধিক কোম্পানি কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। তবে ১৩টি কোম্পানি ১০০ শতাংশের বেশি ডিভিডেন্ড দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আশার আলো দেখাচ্ছে। এই কোম্পানিগুলো প্রমাণ করেছে, প্রতিকূল বাজার পরিস্থিতিতেও তারা ধারাবাহিক মুনাফা অর্জন ও সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড বিতরণে সক্ষম, যা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ডের ১৩টি কোম্পানির অধিকাংশই বহুজাতিক এবং মৌল ভিত্তির প্রতিষ্ঠান। তাদের স্থিতিশীল আয়, শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা এবং বাজারের নেতৃত্বই এমন কঠিন সময়েও উচ্চ ডিভিডেন্ড বিতরণের প্রধান কারণ। যা বিনিয়োগকারীদের জন্য এক সুসংবাদ এবং বাজারে আশাবাদের মূর্ত প্রতীক।
রেকর্ড ব্রেকার রেকিট বেনকিজার: ৩৩৩০% ডিভিডেন্ড
শীর্ষে রয়েছে বহুজাতিক ভোক্তা পণ্যের কোম্পানি রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ লিমিটেড, যারা ২০২৪ সালে দিয়েছে চমকপ্রদ ৩৩৩০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড। দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসা এই কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের কাছে নির্ভরতার নাম।
ভোক্তা পণ্যের দুই দিগন্ত: ইউনিলিভার ও ম্যারিকো
পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, যারা দিয়েছে ৫২০ শতাংশ ক্যাশ এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ, যাদের ডিভিডেন্ড ৪২০ শতাংশ। তারা কেবল মুনাফা করছে না, সেই মুনাফার বড় অংশ শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে ভাগ করে নিচ্ছে।
গ্যাস-চিকিৎসা-তথ্যপ্রযুক্তিতে নির্ভরতা: লিন্ডে, গ্রামীণফোন
শিল্প ও চিকিৎসা গ্যাস উৎপাদনকারী লিন্ডে বাংলাদেশ দিয়েছে ৪০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড এবং টেলিকম খাতের জায়ান্ট গ্রামীণফোন দিয়েছে ৩৭০ শতাংশ। তাদের অব্যাহত ক্যাশ প্রবাহ এবং শক্তিশালী অপারেশনাল ভিত্তি এই অর্জনের পেছনে মূল চালিকাশক্তি।
দেশি জায়ান্ট ওয়ালটন, সরকারি তিন তেল কোম্পানি
দেশীয় ইলেকট্রনিক জায়ান্ট ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ দিয়েছে ৩২০ শতাংশ ক্যাশ। তেল-জ্বালানি খাতের সরকারি কোম্পানিগুলোর মধ্যে মেঘনা পেট্রোলিয়াম ১৭০ শতাংশ ক্যাশ, যমুনা অয়েল ১৫০ শতাংশ ক্যাশ এবং পদ্মা অয়েল ১৪০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড প্রদান করেছে। সরকার মালিকানাধীন হলেও পরিচালনায় দক্ষতা ও মুনাফা বণ্টনে তাদের ইতিবাচক মনোভাব প্রশংসার দাবি রাখে।
স্কয়ার ফার্মা: স্থিরতার প্রতীক
দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ২০২৪ সালে দিয়েছে ১১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড। ওষুধ খাতে কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক ও স্থিতিশীল আয়ের উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
আলোচ্য কোম্পানিগুলোর উচ্চ ডিভিডেন্ড প্রদান এমন সময়ে ঘটছে যখন শেয়ারবাজার দীর্ঘমেয়াদী মন্দার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। এটি কেবল তাদের নিজস্ব আর্থিক সক্ষমতারই প্রমাণ নয়, বরং সামগ্রিকভাবে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতেও সাহায্য করছে। এই 'বনেদি' কোম্পানিগুলো কঠিন পরিস্থিতিতেও বিনিয়োগকারীদের মাঝে উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের জন্য একটি ইতিবাচক দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ: এক কোম্পানির শেয়ার কিনলেন উদ্যোক্তারা
- পাঁচ কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসসি
- শেয়ার কারসাজিতে ১৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ২.৫২ কোটি টাকা জরিমানা
- মৌসুমী-হাসান জাহাঙ্গীরের বিয়ে: ওমর সানীর ‘জুতাপেটা’র হুমকি
- বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ করেছে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি
- বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেয়ায় ক্যাটাগরি উন্নতি
- বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দ্যুতি ছড়াচ্ছে ১৩ ‘বনেদি’ কোম্পানি
- শেয়ারবাজার বাঁচাতে অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি
- শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চান বিনিয়োগকারীরা
- বড় আন্দোলনে নামছে ৩ 'দল'
- মোবাইল কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে বিশেষ প্রণোদনা
- শেয়ারবাজারের ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা
- ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃ'ত্যু ৬
- মুনাফা বেড়েছে বিবিধ খাতের ৬ কোম্পানির