ঢাকা, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতে করোনায় আক্রান্ত ছাড়াল ৫ হাজার, বাংলাদেশে যে আহ্বান

ডুয়া নিউজ- স্বাস্থ্য
২০২৫ জুন ০৭ ১২:৪৭:০৫
ভারতে করোনায় আক্রান্ত ছাড়াল ৫ হাজার, বাংলাদেশে যে আহ্বান

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক আক্রান্তের সংখ্যা কেরালায়। এরপর রয়েছে গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লি। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় কেন্দ্র সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। সকল অক্সিজেন সরবরাহ, আইসোলেশন বেড, ভেন্টিলেটর এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, 'এই মুহূর্তে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৩৬৮। একদিনে আরও চার জনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। ভারত সরকারের সূত্রে জানা গেছে, বেশিরভাগ আক্রান্তের তেমন কোনো সমস্যা নেই ৷ আক্রান্তরা বাড়িতেই চিকিৎসাধীন।'

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৫ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ভারতের স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. সুনীতা শর্মার সভাপতিত্বে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেল, জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রতিক্রিয়া (EMR) সেল, জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (NCDC), ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (ICMR), ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভিল্যান্স প্রোগ্রাম (IDSP) এবং দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

চলতি বছরে করোনা সংক্রমণ বাড়ার খবর পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে ভারত সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে মহামারি ঘোষণার পাঁচ বছর পরেও ভাইরাসটির নতুন ভেরিয়েন্টের আবির্ভাব অব্যাহত রয়েছে। ভারতে গত এক সপ্তাহে করোনা রোগীর সংখ্যা ১২০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ICMR জানিয়েছে, দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের করোনা রোগীদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা গেছে। এসব সংক্রমণ মূলত ওমিক্রনের সাবভেরিয়েন্ট দ্বারা সৃষ্ট।

আইসিএমআর প্রধান ড. রাজীব বেহেল বলেছেন, "এই সাবভেরিয়েন্টগুলোই সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ। তিনি জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রথমে দক্ষিণ ভারতে, পরে পশ্চিম ভারত এবং এখন উত্তর ভারতেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সব আক্রান্ত সমন্বিত রোগ নজরদারি কর্মসূচির (আইডিএসপি) মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে।"

২০২০ সালে শুরু হওয়া এই মহামারিতে ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৪ কোটি ছাড়িয়ে। আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচির আওতায় দেশটিতে ৭২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ আবারও বেড়েছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার কারণে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মাস্ক ব্যবহারে সকলকে আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ভিড়বহুল স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রধান ভ্যারিয়েন্টটি এনবি.১.৮.১ নামে পরিচিত, যা নতুন সংক্রমণের কারণ হিসেবে দায়ী। এটি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, চীন ও হংকংসহ বেশ কয়েকটি দেশে দেখা গেছে। বিশেষ করে চীন ও হংকংয়ে এই ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারতে কিছু ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ভ্যারিয়েন্ট এলএফ.৭ ও দেখা যাচ্ছে।

ইংল্যান্ডে এনবি.১.৮.১ ভ্যারিয়েন্টে ১৩ জন আক্রান্তের খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, এপ্রিলের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাপী নমুনার প্রায় ১০.৭ শতাংশ ছিল এনবি.১.৮.১, যা এক মাস আগের ২.৫ শতাংশ থেকে বেড়েছে।

বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট আগের যেকোনো ধরনের থেকে বেশি মারাত্মক বা প্রাণঘাতী প্রমাণিত হয়নি। তবে এটি আগের ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় দ্রুত ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত