ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বাড়লেও আর্থিক খাতে কমেছে

২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে দেশের ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক হারে খেলাপি ঋণ বেড়েছে, তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে (এনবিএফআই)। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর—এই তিন মাসে এনবিএফআই খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এনবিএফআই খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২৬ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা। তিন মাস পর ডিসেম্বর শেষে তা কমে দাঁড়ায় ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকায়। যদিও এই খাতে খেলাপি ঋণের হার এখনও মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৩.২৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান খারাপ নয়। কিছু প্রতিষ্ঠান ভালো করছে, তাদের ঋণ আদায়ের হারও বেড়েছে।” তবে একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, “এখনও এই খাতের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ঋণ খেলাপি—যা নতুন করে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখায়।”
তবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় এখনো খেলাপি ঋণ বেশি। গত বছর একই সময়ে খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের ২৯.২৭ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে ব্যাংক খাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২০.২ শতাংশ। মাত্র তিন মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা।
এনবিএফআই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বছরের শেষ প্রান্তিকে (ডিসেম্বর) খেলাপি ঋণ আদায় ও পুনঃতফসিলের হার বাড়ে, কারণ এ সময়ে ব্যালান্স শিট তৈরি করতে হয়। পাশাপাশি কিছু প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনে ঋণ আদায় জোরদার করায় খেলাপি ঋণ কমাতে পেরেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ কমলেও এখনও খাতটির একটি বড় অংশ ঝুঁকিতে রয়ে গেছে। এর পেছনে অতীতের অনিয়মের বড় ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কায়সার হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এনবিএফআই খাতে অনিয়ম ২০১৮-২০২০ সালের মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। তবে ব্যাংক খাতে অনিয়ম বহুদিন গোপন ছিল, যা সম্প্রতি প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,“আমাদের প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ ১১ শতাংশ থেকে কমে ৯ শতাংশে নেমেছে। ২০২৪ সাল ছিল চ্যালেঞ্জিং, তবে আমরা এখন বড় ঋণের চেয়ে এসএমই ও ক্ষুদ্র ঋণে গুরুত্ব দিচ্ছি। এতে ভবিষ্যতে খেলাপি আরও কমবে বলে আশা করছি।”
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- লোকসান থেকে মুনাফায় বস্ত্র খাতের চার কোম্পানি
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ‘বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ডাকাতদের আড্ডা হয়ে গেছে’
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- কমোডিটি ডেরিভেটিভ যুগে প্রবেশ করছে দেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিএসইসি ও বৈশ্বিক কাস্টডিয়ান ব্যাংকের বৈঠক