ঢাকা, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
মাকে লেখা শহীদ আনাসের হৃদয়স্পর্শী চিঠি ট্রাইব্যুনালে, পড়লেন চিফ প্রসিকিউটর

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় শান্তিপূর্ণ ও নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই পতন ঘটে তৎকালীন সরকারের। ওই হামলায় প্রাণ হারান দশম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার খান আনাসসহ অন্তত পাঁচজন।
ঘটনার দিন বাসা থেকে বের হওয়ার আগে মায়ের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে যান আনাস। সেই হৃদয়বিদারক চিঠিটি রোববার (২৫ মে) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ার শুনানিতে আদালতে পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
হৃদয়স্পর্শী সে চিঠিতে আনাস লেখেন.....
‘মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। আমি নিজেকে আর আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। সরি আব্বুজান। তোমার কথা অমান্য করে বের হলাম। স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। আমাদের ভাইরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিচ্ছে। একটি প্রতিবন্ধী কিশোর, ৭ বছরের বাচ্চা, ল্যাংড়া মানুষ যদি সংগ্রামে নামতে পারে, তাহলে আমি কেন বসে থাকব ঘরে। একদিন তো মরতে হবেই। তাই মৃত্যুর ভয় করে স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে সংগ্রামে নেমে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যু অধিক শ্রেষ্ঠ। যে অন্যের জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেয় সে-ই প্রকৃত মানুষ। আমি যদি বেঁচে না ফিরি, তবে কষ্ট না পেয়ে গর্বিত হয়ো। জীবনের প্রতিটি ভুলের জন্য ক্ষমা চাই।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চাঁনখারপুল গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানিকালে এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল কক্ষজুড়ে এক নিস্তব্ধতা নেমে আসে। বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি শেষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে আদেশ প্রদান করেন এবং মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ৩ জুন নির্ধারণ করেন।
এই মামলায় আসামি করা হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ মোট ৮ জনকে। ২১ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে জমা দেয়, যা পর্যালোচনা করে প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করে।
মামলার আসামিরা হলেন:
১. ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান
২. সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী
৩. রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম
৪. রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল
৫. শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন
৬. কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন
৭. কনস্টেবল ইমাজ হোসেন
৮. কনস্টেবল মো. নাসিরুল ইসলাম
আটজন আসামির মধ্যে চারজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন: পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন এবং কনস্টেবল মো. নাসিরুল ইসলাম। বাকি চার আসামি পলাতক রয়েছেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাইভে এসে হিরো আলমের আ-ত্ম-হ-ত্যা
- পাঁচ কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসসি
- শেয়ার কারসাজিতে ১৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ২.৫২ কোটি টাকা জরিমানা
- শিক্ষা ক্যাডারে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস সার্কুলার প্রকাশে পিএসসির চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি
- মৌসুমী-হাসান জাহাঙ্গীরের বিয়ে: ওমর সানীর ‘জুতাপেটা’র হুমকি
- ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের শেয়ারবাজার: দৃশ্যমান হচ্ছে ইতিবাচক পদক্ষেপ
- বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেয়ায় ক্যাটাগরি উন্নতি
- মূলধন বাড়াতে রাইট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত
- সাবেক উপদেষ্টা গ্রেপ্তার:চাঞ্চল্যকর তথ্য
- বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে কর, বাড়ছে সুযোগ
- শেয়ারবাজার বাঁচাতে অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি
- ডিভিডেন্ডের দেখা পেলেন চার কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ছাত্রদলের সভাপতি ইস্যুতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ বার্তা
- প্রথমবারের মতো লোকসানে কোম্পানি, ডিভিডেন্ডও তলানিতে
- বিচ হ্যাচারি: ঝলমলে অবস্থান থেকে হঠাৎ অন্ধকারে!