ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শেয়ারবাজারের রাজনৈতিক মালিকানা নেওয়ার ঘোষণা বিএনপির

ডুয়া নিউজ: বাংলাদেশে শেয়ারবাজারসহ অর্থনৈতিক খাতে যত বড় ধরনের সংস্কার হয়েছে, তার অধিকাংশই বিএনপির সময়েই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “আগামী দিনে শেয়ারবাজারের ওনারশিপ বিএনপি নেবে, কারণ এই বাজারে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি।”
শনিবার (২৪ মে) ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় শেয়ারবাজার: দর্শন ও অনুশীলন’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগ ছাড়া উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দেশের অর্থনীতির সঙ্গে শেয়ারবাজারের সংযোগ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। ক্যাপিটাল মার্কেটে রাজনৈতিক ওনারশিপ নেই বলেই এই দুরবস্থা। সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়ের ঋণ শেয়ারবাজার থেকে তোলা সম্ভব, তবুও আমরা ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবনের (আইএমএফ) পেছনে ঘুরছি।”
তিনি আরও বলেন, “শেয়ারবাজার দক্ষভাবে পরিচালনা করতে হলে সেলফ রেগুলেটরি ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে নিজস্বভাবে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দিতে হবে, আর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি রাখবে তদারকি ভূমিকা।”
দেবপ্রিয়: কাঠামোগত দুর্বলতা শেয়ারবাজারের মূল সংকট
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ২০১০-১১ সালে শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বের হয়ে গেছে, যার মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
তিনি বলেন, “শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ব্যবস্থা না থাকায় এর চরিত্র বদলে গেছে। এটি এখন আর প্রকৃত বিনিয়োগের প্ল্যাটফর্ম নয়। শেয়ারবাজারকে ফিরিয়ে আনতে হলে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং অংশগ্রহণমূলক সংস্কার আনতে হবে।”
জামায়াতের বক্তব্য
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মো. মোবারক হোসাইন বলেন, ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে শেয়ারবাজারকে ঢেলে সাজালে তা বৈশ্বিক রোল মডেলে পরিণত হতে পারে। তিনি যাকাতভিত্তিক গবেষণার ওপর জোর দেন।
এনসিপির বক্তব্য
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনুভা জাবিন বলেন, “শেয়ারবাজার একটি চক্রের হাতে বন্দি ছিল। বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তার মধ্যে কোনো যোগসূত্র ছিল না। এই disconnect থেকে বেরিয়ে আসতে হলে স্থায়ী, সময়োপযোগী পরিকল্পনা দরকার।”
প্যানেল আলোচকদের প্রতিক্রিয়া
আলোচকরা বলেন, শেয়ারবাজার এখন এলিট শ্রেণির ক্লাবে পরিণত হয়েছে, যেখানে মাত্র ১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী লাভবান হয়েছে। বাকিরা ক্ষতিগ্রস্ত। তারা বলেন, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীর মাঝে বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে তুলতে না পারলে শেয়ারবাজার কখনোই কার্যকর হতে পারবে না।
তারা আরও বলেন, “ব্যাংকিং খাতের মালিকানাধীন গোষ্ঠীগুলোর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ক্যাপিটাল মার্কেট উপেক্ষিত থেকে গেছে। সব ধরনের বিনিয়োগ ব্যাংকনির্ভর হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে, যা আর টেকসই নয়।”
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিও হিসাবে ৫ লাখ টাকা নগদ জমা ও উত্তোলনের কথা ভাবছে বিএসইসি
- সরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ, তালিকায় ২১ প্রতিষ্ঠান
- ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন বাতিল করল বিএসইসি
- বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুললেন অর্থ উপদেষ্টা
- ‘এলাম পরামর্শ নিতে, পেলাম পদত্যাগের বার্তা’- বিএসইসি চেয়ারম্যানের ক্ষোভ
- মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও পাবলিক রুলস ইস্যুতে টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত সুপারিশ
- দশ হাজার কোটি ঋণের বোঝায় আইসিবি, প্রস্তাব বিশেষ তহবিলের
- দুর্বল ৬ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও বেড়েছে
- ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংক এমডিবিহীন, নেতৃত্ব সংকট তীব্র
- ঢাকা অচলের ঘোষণা
- তিন কোম্পানির বোনাস ডিভিডেন্ডে বিএসইসির সম্মতি
- লোকসান থেকে মুনাফায় বস্ত্র খাতের চার কোম্পানি
- নানামুখী চেষ্টার পরও ভেঙে পড়ছে দেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারে ৬১৭টি বিও হিসাব স্থগিত