ঢাকা, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২
দেশের সীমান্তে কাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে ভারত, কেন দিচ্ছে?
ডুয়া ডেস্ক: ভারতে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশি সন্দেহে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এর জেরে সীমান্তে ‘পুশ-ব্যাক’ (ভারতের দৃষ্টিতে) বা ‘পুশ-ইন’ (বাংলাদেশের মতে) ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে।
কী এই পুশ-ব্যাক বা পুশ-ইন?
পুশ-ব্যাক বা পুশ-ইন বলতে বোঝায় – কাউকে সীমান্তে নিয়ে গিয়ে জোর করে প্রতিবেশী দেশে ঠেলে দেওয়া। এই প্রক্রিয়াটির কোনো আইনি স্বীকৃতি নেই ভারতে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এটি অনানুষ্ঠানিকভাবে চলমান। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এটি পুরোপুরি অবৈধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
কারা পুশ-ব্যাকের শিকার?
সম্প্রতি গুজরাট ও রাজস্থানে বাংলাদেশি সন্দেহে অন্তত হাজারখানেক মানুষকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। জানা গেছে, এদের অনেককে বিশেষ বিমানে ত্রিপুরার আগরতলায় এনে পরে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
তবে অনেক সময় যাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তারা আদৌ বাংলাদেশি কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই। কিছু ক্ষেত্রে ধৃতদের গুজরাট বা রাজস্থান থেকে সরিয়ে সীমান্ত এলাকায় এনে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষা
ভারতের আইন অনুযায়ী, কোনো বিদেশিকে ধরা হলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। এরপর মামলা চলার পর দোষী সাব্যস্ত হলে সাজা শেষে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়। কিন্তু গুজরাট ও রাজস্থানে যাদের ধরা হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগকে কোনো আদালতে তোলা হচ্ছে না।
মানবাধিকার সংস্থা ‘মাসুম’-এর প্রধান কিরীটী রায়ের মতে, আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এভাবে পুশ-ব্যাক করার ঘটনা ভারতীয় সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে।
কেন পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে?
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুশ-ব্যাক মূলত ‘সহজ সমাধান’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারণ আইনি পথে গ্রেফতার, বিচার, সাজার পর ফেরত পাঠাতে বহু সময় লাগে এবং জেলে জায়গার সংকট দেখা দেয়। সেই জটিলতা এড়াতেই লোকজনকে সরাসরি সীমান্তে নিয়ে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে।
তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, পাচার হওয়া নারী বা মানবিক পরিস্থিতির শিকার ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত পাঠানোর নজির রয়েছে। এ ধরনের ফেরত পাঠানোকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
এভাবে পুশ-ব্যাক করার ফলে অনেক সময় নিরীহ মানুষ, এমনকি ভারতের অন্য রাজ্য থেকে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরাও বিপাকে পড়ছেন। ভুলভাবে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে তারা আইনবহির্ভূত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
যে প্রক্রিয়ায় ভারতে বাংলাদেশি সন্দেহভাজনদের সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তা আইনি ও মানবিক উভয় দিক থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। সরকারের উচিত এই বিষয়ে স্বচ্ছতা আনা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড বজায় রেখে সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খোঁজা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- নতুন মার্জিন নীতিতে কারা সুবিধা পাবেন, কারা হারাবেন?
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: কবে, কখন, কোথায়-যেভবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- শেয়ারবাজারই হতে পারে ওষুধ শিল্পের নতুন প্রাণশক্তি: ডিএসই চেয়ারম্যান
- শেয়ারবাজারে নতুন মার্জিন বিধিমালা জারি করল বিএসইসি
- নিউজিল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি দেখুন(LIVE)
- বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের ৬ কোম্পানির শেয়ারে ঝলক
- পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্তা
- ‘নো ডিভিডেন্ড’- এর বদনাম ঘুচাল বস্ত্র খাতের তিন কোম্পানি
- পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা কী পাবেন? জানালেন গভর্নর
- সাপোর্টের রেকর্ড মুনাফা, ১৫ বছরে সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড
- শিক্ষাবৃত্তি: প্রতি মাসে পাবে ৩ হাজার টাকা, আবেদন করবেন যেভাবে
- পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার শূন্য ঘোষণা নিয়ে যা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা
- চলতি সপ্তাহে আসছে ৯ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- ব্রাজিল বনাম হন্ডুরাস: ৭ গোলে শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- চলতি সপ্তাহে আসছে ৪৪ কোম্পানির ইপিএস