ঢাকা, রবিবার, ১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশের সীমান্তে কাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে ভারত, কেন দিচ্ছে?
.jpg)
ডুয়া ডেস্ক: ভারতে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশি সন্দেহে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এর জেরে সীমান্তে ‘পুশ-ব্যাক’ (ভারতের দৃষ্টিতে) বা ‘পুশ-ইন’ (বাংলাদেশের মতে) ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে।
কী এই পুশ-ব্যাক বা পুশ-ইন?
পুশ-ব্যাক বা পুশ-ইন বলতে বোঝায় – কাউকে সীমান্তে নিয়ে গিয়ে জোর করে প্রতিবেশী দেশে ঠেলে দেওয়া। এই প্রক্রিয়াটির কোনো আইনি স্বীকৃতি নেই ভারতে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এটি অনানুষ্ঠানিকভাবে চলমান। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এটি পুরোপুরি অবৈধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
কারা পুশ-ব্যাকের শিকার?
সম্প্রতি গুজরাট ও রাজস্থানে বাংলাদেশি সন্দেহে অন্তত হাজারখানেক মানুষকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। জানা গেছে, এদের অনেককে বিশেষ বিমানে ত্রিপুরার আগরতলায় এনে পরে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
তবে অনেক সময় যাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তারা আদৌ বাংলাদেশি কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই। কিছু ক্ষেত্রে ধৃতদের গুজরাট বা রাজস্থান থেকে সরিয়ে সীমান্ত এলাকায় এনে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষা
ভারতের আইন অনুযায়ী, কোনো বিদেশিকে ধরা হলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। এরপর মামলা চলার পর দোষী সাব্যস্ত হলে সাজা শেষে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়। কিন্তু গুজরাট ও রাজস্থানে যাদের ধরা হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগকে কোনো আদালতে তোলা হচ্ছে না।
মানবাধিকার সংস্থা ‘মাসুম’-এর প্রধান কিরীটী রায়ের মতে, আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এভাবে পুশ-ব্যাক করার ঘটনা ভারতীয় সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে।
কেন পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে?
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুশ-ব্যাক মূলত ‘সহজ সমাধান’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারণ আইনি পথে গ্রেফতার, বিচার, সাজার পর ফেরত পাঠাতে বহু সময় লাগে এবং জেলে জায়গার সংকট দেখা দেয়। সেই জটিলতা এড়াতেই লোকজনকে সরাসরি সীমান্তে নিয়ে পুশ-ব্যাক করা হচ্ছে।
তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, পাচার হওয়া নারী বা মানবিক পরিস্থিতির শিকার ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত পাঠানোর নজির রয়েছে। এ ধরনের ফেরত পাঠানোকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
এভাবে পুশ-ব্যাক করার ফলে অনেক সময় নিরীহ মানুষ, এমনকি ভারতের অন্য রাজ্য থেকে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরাও বিপাকে পড়ছেন। ভুলভাবে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে তারা আইনবহির্ভূত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
যে প্রক্রিয়ায় ভারতে বাংলাদেশি সন্দেহভাজনদের সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তা আইনি ও মানবিক উভয় দিক থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। সরকারের উচিত এই বিষয়ে স্বচ্ছতা আনা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড বজায় রেখে সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খোঁজা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- ভারতে রেড অ্যালার্ট জারি!
- ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে দুই কোম্পানি