ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শেখ হাসিনার মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে রয়টার্স ও বিটিভি

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ০৮:২০:৩৩

শেখ হাসিনার মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে রয়টার্স ও বিটিভি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এই ঐতিহাসিক রায় দেশের সব গণমাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-এর মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সও রায়ের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করবে। এছাড়াও, ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বড় পর্দায় এই বিচারিক কার্যক্রম দেখানো হবে।

চব্বিশের জুলাই গণহত্যার দায়ে দায়ের করা এ মামলার বিচারকাজ সরাসরি দেখানোর জন্য সরকারি গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি বিশেষ টিম এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে। সকাল ৮টার পর লাইভ সম্প্রচারের টিম ট্রাইব্যুনাল গেটে অবস্থান নিয়েছে। দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরাও মূল ফটকের বাইরে অপেক্ষায় রয়েছেন।

আজ (সোমবার) বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এই রায় ঘোষণা করা হবে। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে গতকাল (রোববার) সন্ধ্যা থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জনসাধারণের চলাচলও সীমিত করা হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিনটি ধার্য করা হয়েছিল। মামলার মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-জেরা সম্পন্ন হয় এবং ৯ কার্যদিনে প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিখণ্ডন চলে। ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

যুক্তিতর্কে প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিল। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় মামলার অন্যতম আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, যদিও তার আইনজীবী খালাস চেয়েছিলেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আশা প্রকাশ করেছেন যে হাসিনা-কামালও খালাস পাবেন।

এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র, জব্দতালিকা, দালিলিক প্রমাণাদি এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে। মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই মামলার প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত