ঢাকা, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২

দিল্লিতে হাসিনার গোপন ‘ওয়ার রুমে’ সাবেক মন্ত্রী–এমপিদের বেঠক

২০২৫ নভেম্বর ১২ ১২:১২:১৪

দিল্লিতে হাসিনার গোপন ‘ওয়ার রুমে’ সাবেক মন্ত্রী–এমপিদের বেঠক

ডুয়া নিউজ ডেস্ক : ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পলাতক শীর্ষ নেতারা বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিকে তাদের রাজনৈতিক রণকৌশলের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে জানা গেছে। সেখানে থেকেই তারা দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সরকার পতনের পরিকল্পনা তৈরি করছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনের একটি সুরক্ষিত ভবনে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা ওই বাড়িটিই এখন কার্যত তাঁর রাজনৈতিক কর্মকৌশলের প্রধান কেন্দ্র বা ‘ওয়ার রুম’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, যিনি সম্প্রতি ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ এশিয়া চ্যাপ্টারের প্রধানের দায়িত্ব হারিয়েছেন।

সূত্রমতে, শেখ হাসিনার দিল্লিস্থ এই বাসভবনে নিয়মিতভাবে চিকিৎসক ও নার্সদের উপস্থিতি থাকে। পাশাপাশি রয়েছেন ভারতের প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ এক সাবেক হাইকমিশনার এবং একজন আইনজীবী, যিনি আইনি ও গণমাধ্যম-সম্পর্কিত বিষয়গুলো তদারক করছেন। দিল্লি প্রেস ক্লাবের এক সাংবাদিকও সেখানে সহায়তা করছেন বলে জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ অক্টোবর হাসিনার ওই বাসভবনে চার ঘণ্টাব্যাপী এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সেনা, পুলিশ ও প্রশাসনের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং আওয়ামী লীগের একাধিক সাবেক এমপি ও মন্ত্রী। তাদের মধ্যে ছিলেন—ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আকবর হোসেন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম, মহিউদ্দিন বাচ্চু, সাইমুম সরোয়ার কমল, আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু এবং ছোট মনির।

ওই বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রথমত, ‘গুম প্রসিকিউশন’ ইস্যুতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব ও সাবেক কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ। দ্বিতীয়ত, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার কৌশল গ্রহণ এবং বিভিন্ন আন্দোলন জোরদারের পরিকল্পনা। তৃতীয়ত, সংগঠন পুনর্গঠন, তৃণমূল পর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ প্রধান শহরগুলোতে সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বৈঠক নিয়েই শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় বলে জানা গেছে। পুতুল মাকে রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ রেখে আপাতত নীরব থাকার পরামর্শ দেন, কিন্তু হাসিনা এতে ক্ষুব্ধ হন। পুতুলের মতে, যেসব ব্যক্তিদের নিয়ে হাসিনা বৈঠক করেছেন, তাঁরাই দলের বর্তমান বিপর্যয়ের মূল কারণ; কিন্তু হাসিনার দাবি, এই ব্যক্তিদের দিয়েই পরিস্থিতি বদলাতে হবে।

সূত্র: দৈনিক আমার দেশ ।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত