ঢাকা, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে শেয়ারবাজার, অভিযোগের তীর নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দিকে

২০২৫ নভেম্বর ০৯ ১৫:৩৪:১১

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে শেয়ারবাজার, অভিযোগের তীর নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজার ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ করছেন বিনিয়োগকারীরা। সেই অভিযোগের তীর খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার দিকে। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, ডিভিডেন্ড মৌসুমে বাজার ঘুরে না দাঁড়িয়ে ধারাবাহিক দরপতন চলছে। আর এর জন্য দায়ী শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাজারে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ না নিয়ে একের পর এক বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিরোধী বিতর্কিত পদক্ষেপ ও নির্দেশনা জারি করছে বিএসইসি।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বছরের শুরু থেকেই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করেছিল এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে এসেছিল। সূচক ও লেনদেনও বাড়ছিল প্রত্যাশা অনুযায়ী। এতে সকল শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়ছিল। সেপ্টেম্বরে এনবিআররের বিতর্কিত বিনিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যুর কারণে বাজার পড়তে থাকে। নানা সমালোচনার পর সেই অবস্থা থেকে আবারও বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। কিন্তু এরপর বিএসইসির একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারের প্রতি আস্থা সঙ্কট তৈরি করে। বিএসইসির সর্বশেষ মার্জিন ঋণের ইস্যু বাজারের জন্য আরো মারাত্বক বিপর্যয় ডেকে আনে। যার ফলে আজও বাজারের অবস্থা করুন অবস্থায় চলে যায়। মার্জিন ঋণ ইস্যুতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিশেষ করে ৫ লাখ টাকার নিচে যাদের বিনিয়োগ রয়েছে তাদেরকে স্বার্থের পরিপন্থি কাজ করা হয়েছে। বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সকল শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ অতীব জরুরী। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেদিকে যাচ্ছেই না। তারা বাজারকে ধ্বংসের জন্য যত পদক্ষেপ রয়েছে তার সবই প্রয়োগ করছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তরা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হওয়ায় তারা শেয়ারবাজারকে ধ্বংস করতে চাইছে। তাই সাধারণ বিনিয়োকারীদের স্বার্থবিরোধী একের পর এক নির্দেশনা জারি করছে। যাতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যায়। যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে- তবে বিনিয়োগকারীরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। শেয়ারবাজারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় বিএসইসিতে কর্মরত ফ্যাসিস্ট সরকারে সকল দোসরদের অপসারণ করা জরুরি।

এদিক, আজ (০৯ নভেম্বর) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৮.০১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৯৯.৯২ পয়েন্টে। এদিন অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ১৬.৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২২.৬০ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ১১.৮১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯২৮.৭৯ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে মোট ৩৯০টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৩৪টির দর বেড়েছে, ৩২৯টির দর কমেছে এবং ২৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইতে এদিন ৪০২ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এদিকে, অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ২২ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন সিএসইতে ১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।

আজ সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৩৬টির, কমেছে ১১৪টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৫টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৬.০৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯৫৮.৫২ পয়েন্টে। আগেরদিন সূচক সিএএসপিআই ৭০.১২ পয়েন্ট কমেছিল।

এসএখান/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত