ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

এক টাকার নিচে শেয়ারবাজারের চার কোম্পানির শেয়ার!

২০২৫ নভেম্বর ০৪ ০৬:৫৫:০৬

এক টাকার নিচে শেয়ারবাজারের চার কোম্পানির শেয়ার!

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের গভীর আস্থাহীনতার প্রতিফলন ঘটিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) শেয়ারের দর এখন ১ টাকার নিচে লেনদেন হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দুর্বল শেয়ারগুলোর লেনদেন দক্ষতা বাড়াতে ডিএসই সম্প্রতি টিক সাইজ সংক্রান্ত নতুন নিয়ম চালু করেছে।

যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ১ টাকার নিচে নেমেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। সোমবার (০৩ নভেম্বর) প্রিমিয়ার লিজিং এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয় ৯০ পয়সায়। এর আগে পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার ২১ অক্টোবর এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার ২৬ অক্টোবরই ৯০ পয়সায় নেমে এসেছিল।

টিক সাইজ সংস্কার ও কার্যকারিতা

টিক সাইজ হলো কোনো সিকিউরিটির সর্বনিম্ন যে দামে ওঠানামা করার অনুমতি রয়েছে। ট্রেডিংয়ের অদক্ষতা দূর করতে ডিএসই ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে ১ টাকার নিচে লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজগুলোর জন্য নতুন টিক সাইজ নিয়ম কার্যকর করেছে।

আগে শেয়ারের দামগুলো সর্বনিম্ন ১০ পয়সা ব্যবধানে ওঠানামা করতে পারত। এটি স্বল্পমূল্যের শেয়ারের মূল্য সমন্বয়কে সীমিত করত।

নতুন নীতিমালায় ১ টাকার নিচে থাকা শেয়ারগুলো এখন ০১ পয়সা ব্যবধানে ওঠানামা করতে পারবে। এটি আরও সূক্ষ্ম মূল্য সমন্বয়, মসৃণ লেনদেন এবং বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্য নির্ধারণে সাহায্য করবে।

ডিএসই আশা করছে, এই সমন্বয় সার্কিট ব্রেকার নিয়মের কারণে সৃষ্ট স্থবিরতা রোধ করবে এবং স্বল্পমূল্যের সিকিউরিটিজগুলোর তারল্য বা লিকুইডিটি উন্নত করবে। ডিএসইর অটোমেটেড ট্রেডিং রেগুলেশনস, ১৯৯৯-এর ১৮ নম্বর রেগুলেশন অনুযায়ী এই নতুন নিয়মটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র

সাম্প্রতিক ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ১০০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড তাদের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন করছে। এর মধ্যে ৭০টি কোম্পানি (ব্যাংকিং, বীমা, এনবিএফআই, টেক্সটাইল, খাদ্য, পরিষেবা এবং প্রকৌশল খাত) এবং ৩৪টি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। উদ্বেগজনকভাবে, ৫৫টি কোম্পানি ৫ টাকারও নিচে লেনদেন করছে।

বাজার পর্যবেক্ষকরা এই দীর্ঘস্থায়ী পতনের জন্য রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, তারল্য সংকট এবং দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণকে দায়ী করছেন। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, এই দীর্ঘ হতাশা নতুন বিনিয়োগকারীদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছে এবং বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের প্রস্থানকে উৎসাহিত করছে, যা লেনদেনের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে এবং শেয়ারের দামকে নিম্নমুখী করে তুলছে।

এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তারা মনে করছেন, টিক সাইজের এই সংস্কার স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর লেনদেনের নমনীয়তা বাড়াবে, মূল্য অনুসন্ধানে সহায়তা করবে এবং ধীরে ধীরে স্বল্প-মূলধনি স্টকগুলোর ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনবে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত