ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২

শেয়ারবাজারে ৪ কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ!

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

রিপোর্টার

২০২৫ অক্টোবর ৩১ ২২:১৬:০১

শেয়ারবাজারে ৪ কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ!

মোবারক হোসেন: বিদায়ী সপ্তাহে (২৬-৩০ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দর পতনের শীর্ষে উঠে আসা চার কোম্পানির ডিভিডেন্ড বঞ্চনা ও দুর্বল আর্থিক ভিত্তি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য চরম দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে। এই চারটি কোম্পানি—স্টাইলক্র্যাফট লিমিটেড, মেঘনা সিমেন্ট মিলস পিএলসি, বসুন্ধরা পেপার মিলস এবং ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড—এর শেয়ারের দামে ব্যাপক ধস নামার প্রধান কারণ হিসেবে তাদের 'নো ডিভিডেন্ড' ঘোষণা এবং আর্থিক দুর্দশাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই চারটি কোম্পানিই ৩০ জুন, ২০২৫ সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর বিধিমালা মোতাবেক ডিএসই কোম্পানিগুলোর ওপর নিম্নলিখিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে:

ক্যাটাগরি পতন: টানা দুই অর্থবছর ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হওয়ায় স্টাইলক্র্যাফট ('বি' থেকে 'জেড'), মেঘনা সিমেন্ট ('এ' থেকে 'জেড') এবং বসুন্ধরা পেপার মিলস ('এ' থেকে 'জেড') কে নিম্নমানের ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মার্জিন ঋণ স্থগিত: ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখ থেকে এই তিনটি কোম্পানির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে মার্জিন ঋণ সুবিধা দেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই সম্মিলিত কঠোর পদক্ষেপগুলোই শেয়ারগুলোতে তীব্র বিক্রয় চাপ সৃষ্টি করেছে, যার ফলস্বরূপ কোম্পানিগুলোর শেয়ার সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষে অবস্থান করে বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে।

স্টাইলক্র্যাফ্ট লিমিটেড

সাপ্তাহিক দর পতনের হার ছিল ১৫.৯৯ শতাংশ। টানা দ্বিতীয় অর্থবছর ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটি 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। এই অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ০৮ পয়সা। কোম্পানিটি বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

মেঘনা সিমেন্ট মিলস

সপ্তাহের ব্যবধানে মেঘনা সিমেন্ট মিলসের শেয়ারের দর কমেছে ১৫.১২ শতাংশ। কোম্পানিটির লোকসান ব্যাপক হারে বেড়ে শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৫৮ পয়সা। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এর শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ঋণাত্মক হয়ে ১ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটি বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিল।

বসুন্ধরা পেপার মিলস

ইতিবাচক বাজারেও শেয়ারটির দর কমেছে ১৪.০১ শতাংশ। কোম্পানিটি আগের অর্থবছরের মুনাফা ছিল ১ টাকা ১০ পয়সা। সেখান থেকে সরে এসে বিদায়ী অর্থবছরে ১৮ টাকা ৯৮ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে। মুনাফা থেকে লোকসানে যাওয়ার কারণেই এটি 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। কোম্পানিটি বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় পঞ্চম স্থানে ছিল।

ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ

‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণার পাশাপাশি কোম্পানিটির মুনাফায় বড় পতন হয়েছে। তারপরও কোম্পানিটি বিদায়ী অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৯ পয়সা মুনাফা করেছে। কিন্তু এরপরও বিনিয়োগকারীদের কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো আগের বছর শেয়ারপ্রতি ১৮ পয়সা থাকলেও বিদায়ী অর্থবছরে ক্যাশ ফ্লো নেমেছে মাইনাস ২ টাকা ৫৭ পয়সায়। এসব কারণে শেয়ারটির দর কমেছে ১২.৯৮ শতাংশ।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত