ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: মাসুদ রানা

২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১৯:৫৯:৪৯

ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: মাসুদ রানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব বিদ্যমান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্ক্সবাদী)। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা বা আপসকে জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছার প্রতিফলন বলা যায় না; জনগণের ইচ্ছার প্রকাশ ঘটাতে হলে গণম্যান্ডেট নেওয়া অপরিহার্য।

তিনি বলেন, “যে পদ্ধতিতে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই জনগণের ম্যান্ডেট গ্রহণের সমান নয়। জনগণকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে, নইলে ভবিষ্যতে এ প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”

মাসুদ রানা আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দূর করে ঐকমত্য সৃষ্টি করা। কিন্তু প্রায় ছয় মাসের আলোচনার পর কমিশন যে প্রস্তাবনা তৈরি করেছে, তা পুরো প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

তার মতে, “কমিশনের কর্মকাণ্ডে অস্বচ্ছতা তৈরি হয়েছে, যা গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে যায় না। আমরা এই অগণতান্ত্রিক পথে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সমর্থন করি না। এতে সংবিধান ও রাজনীতিতে এক বড় সংকটের জন্ম হতে পারে।”

বাসদ নেতা জানান, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ২০টি পয়েন্ট নিয়ে মতবিনিময় হলেও পরে অতিরিক্ত ৬৪টি পয়েন্ট যুক্ত করে ৮৪ দফা সনদ তৈরি করা হয়। এর মধ্যে সর্বসম্মত প্রস্তাব মাত্র ২৯টি। ফলে এই সনদকে ‘সর্বসম্মত’ বলা বিভ্রান্তিকর।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, যেসব বিষয়ে সব দল একমত হবে, কেবল সেগুলোই ঐকমত্য হিসেবে ধরা হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সেই নীতি মানা হয়নি।”

বিবৃতিতে বলা হয়, কমিশন প্রস্তাব করেছে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৪৮টির ওপর একসঙ্গে গণভোট নেওয়ার। এতে ‘হ্যাঁ’ ভোট মানে সব প্রস্তাবে সমর্থন আর ‘না’ মানে সবকিছুর বিরোধিতা যা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক নয়। জনগণের মতামত নিতে হলে প্রতিটি প্রস্তাবে আলাদাভাবে ভোট নেওয়া প্রয়োজন।

বাসদ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, এই প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়িত হলে জুলাই সনদের বৈধতা প্রশ্নের মুখে পড়বে এবং ভবিষ্যতে এটি অগণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার নজির হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এছাড়া সনদে বলা হয়েছে, এর বৈধতা আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না যা গণতান্ত্রিক বিচারব্যবস্থার পরিপন্থী।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত