ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

গাজায় হাতছাড়া হতে বসেছে শান্তি প্রচেষ্টা

২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১০:২১:০১

গাজায় হাতছাড়া হতে বসেছে শান্তি প্রচেষ্টা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েল গাজার ওপর নতুন করে হামলা চালিয়েছে, যদিও অস্ত্রবিরতি পুনরায় কার্যকর রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছিলেন শতাধিক মানুষ, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন। আল-শিফা হাসপাতাল সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হামলা চালিয়েছে এমন স্থানে যেখানে অস্ত্র মজুত ছিল এবং এটি তাদের সেনাদের জন্য ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ সৃষ্টি করেছিল।

এই নতুন হামলা গাজার নাজুক অস্ত্রবিরতিকে পুনরায় অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ‘প্রতিশোধমূলক জোরালো হামলার’ নির্দেশ দেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ওই হামলায় ১০৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হামাসের সিনিয়র যোদ্ধাদের লক্ষ্য করেছে এবং ‘ডজনখানেক’ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এরপর বুধবার দুপুরে তারা অস্ত্রবিরতি কার্যকর রাখার ঘোষণা দিয়েছে, কিন্তু একইদিন সন্ধ্যায় আবারও হামলা চালিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সর্বশেষ হামলার পরও অস্ত্রবিরতি ‘ঝুঁকির মুখে নেই’। অন্যদিকে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার হামলার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে, তবে তারা এখনও যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফান ডুজারিক বলেছেন, গুতেরেস গাজার বেসামরিক মানুষের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এই হামলায় বহু শিশু নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক বলেছেন, এত বিপুল সংখ্যক হতাহতের খবর ‘ভয়াবহ’। তিনি সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, শান্তি প্রচেষ্টা যেন ‘হাতছাড়া না হয়’। একই আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও।

হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাফাহে যে ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে, তার সঙ্গে তাদের যোদ্ধাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা অস্ত্রবিরতি মানার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে সাম্প্রতিক হামলার কারণে এক মৃত ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। হামাস বলেছে, ইসরায়েলের নতুন হামলা চলতে থাকলে এটি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধার অভিযানে বাধা সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ রেডক্রস প্রতিনিধিদের ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারা দাবি করেছে, এ ধরনের সাক্ষাৎ নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। হামাস এই নিষেধাজ্ঞাকে বন্দিদের অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তারা বলেছে, যুদ্ধ চলাকালে এটি কার্যত প্রযোজ্য ছিল এবং ইসরায়েলের ধারাবাহিক হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন ও অনাহারে রাখার নীতিরই অংশ।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত